ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘ফাঙ্গ-ওয়ং’ : ফিলিপাইনে ফের আঘাত হানতে পারে?

ফিলিপাইনে আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, উদ্বেগে উপকূলের মানুষ

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার দেশ ফিলিপাইনে আবারও একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ‘ফং-ওং’ নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি ইতিমধ্যে দেশটির দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছে। আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, এটি সুপার টাইফুনে রূপ নিতে পারে এবং এর প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

এর আগে, গত সপ্তাহে আঘাত হানা ‘কালমায়েগি’র তাণ্ডবে দেশটির প্রায় দুইশ’ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ্যা সংস্থা ‘পাগাসা’ জানিয়েছে, ফং-ওং-এর বিস্তৃতি প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে এরই মধ্যে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলে রবিবার এটি আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশটির রাজধানী ম্যানিলাসহ ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ এবং সিয়ারগাওয়ে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে এবং সমুদ্রগামী সকল নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ফং-ওং-এর কারণে এরই মধ্যে ফিলিপাইনের বিভিন্ন বিমান সংস্থা ফ্লাইট বাতিল করতে শুরু করেছে। শুক্রবার আবহাওয়া দপ্তর ‘কালমায়েগি’র দুর্বলতা কমিয়ে ফং-ওং-কে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘোষণা করেছে।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানিয়েছে, এই বছর এটি ফিলিপাইনে আঘাত হানা ২১তম ঘূর্ণিঝড়।

এর আগে আঘাত হানা ‘কালমায়েগি’র ধ্বংসযজ্ঞ এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছে।

মূলত দুর্বল অবকাঠামো, বন্যাপ্রবণ এলাকা এবং সময় মতো সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে না পারার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে, যা ঘূর্ণিঝড়গুলোকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। এর ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বাড়ছে, যা জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলছে।

বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর জন্য এমন পরিস্থিতি একটি উদ্বেগের কারণ। আমাদের দেশেও ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে প্রতি বছর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সরকার এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *