উবার যাত্রীর জীবন বাঁচালেন চালক! যা করলেন, দেখলে অবাক হবেন

ফিলাডেলফিয়ার রাস্তায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনায়, উবার (Uber) চালকের তৎপরতায় রক্ষা পেলেন এক যাত্রীর জীবন। ৪১ বছর বয়সী জাস্টিন অ্যান্ডারসন নামক ওই যাত্রী, গত ফেব্রুয়ারীর ২৫ তারিখে, উবারে চড়ার সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তাৎক্ষণিকভাবে, গাড়ির চালক ৩৮ বছর বয়সী তারাস জভির, পরিস্থিতি উপলব্ধি করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, যা শেষ পর্যন্ত অ্যান্ডারসনের জীবন বাঁচিয়ে দেয়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তারাস জানান, যাত্রী অ্যান্ডারসনের সাথে স্বাভাবিকভাবেই সঙ্গীতের আলোচনা চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই, অ্যান্ডারসনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

তিনি জানান, “আমি বুঝতে পারছিলাম, তিনি যেন শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।” দেরি না করে, তারাস ৯১১-এ ফোন করেন এবং জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন জানান।

এরপর, তিনি দ্রুত অ্যান্ডারসনকে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সিপিআর (CPR) দিতে শুরু করেন, যা একজন মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক্তন অ্যাম্বুলেন্স চালক হওয়ার সুবাদে, তারাস এই বিষয়ে আগে থেকেই প্রশিক্ষিত ছিলেন।

চিকিৎসকদের মতে, অ্যান্ডারসনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল, যা একটি মারাত্মক পরিস্থিতি। হাসপাতালে ভর্তির পর, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে চিকিৎসা করা হয়।

বর্তমানে, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। অ্যান্ডারসনের মা, ডেবোরা, তাঁর ছেলের জীবন বাঁচানোর জন্য তারাস জভিরের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, “আমার ছেলে যদি সেদিন একা থাকতেন, তাহলে হয়তো আজ তিনি আমাদের মাঝে থাকতেন না।” ডেবোরা আরও জানান, ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে তিনি একটি ‘গোফান্ডমি’ (GoFundMe) নামক ওয়েবসাইটে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন।

এই ঘটনায়, তারাস জভিরের মানবিকতা ও দ্রুত পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তিনি শুধু একজন উবার চালক ছিলেন না, বরং একজন সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসা একজন সত্যিকারের হিরো।

তার এই ত্যাগের কারণেই, আজ জাস্টিন অ্যান্ডারসন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তারাস নিজেও জানিয়েছেন, তিনি অ্যান্ডারসনের সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এবং তাঁর সাথে দেখা করার অপেক্ষায় আছেন।

এই ঘটনা আমাদের সমাজে মানবিকতার গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণ করে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *