উগান্ডায় ইবোলার প্রাদুর্ভাবের সমাপ্তি!

উগান্ডায় সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের অবসান ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজধানী কাম্পালায় প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার তিন মাস পর তারা এই ঘোষণা দেয়। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের অফিশিয়াল একাউন্ট থেকে এই তথ্য জানায়।

খবরটি নিশ্চিত করে তারা আরও জানায়, সর্বশেষ রোগী সুস্থ হওয়ার ৪২ দিন পর নতুন কোনো সংক্রমণ ধরা পড়েনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, এবারের প্রাদুর্ভাবে ১৪ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। এর মধ্যে নিশ্চিত রোগী ছিলেন ১২ জন এবং সন্দেহভাজন ২ জন।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ জন, যাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয় এবং ২ জন সন্দেহভাজন ছিলেন। এছাড়া, ১০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই সফলতার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস দেশটির সরকার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “ইবোলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উগান্ডা সরকার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাই অভিনন্দন।”

উল্লেখ্য, উগান্ডায় প্রায়ই ইবোলার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এর কারণ হলো দেশটির উষ্ণমণ্ডলীয় বনভূমি, যা এই ভাইরাসের প্রাকৃতিক আবাসস্থল।

এবারের প্রাদুর্ভাবটি ‘সুদান’ স্ট্রেইনের কারণে হয়, যা কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিনের আওতায় নেই। গত ৩০শে জানুয়ারি, যখন একজন নার্স এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তখনই এর সূত্রপাত হয়।

২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত উগান্ডায় ইবোলার এটি নবম প্রাদুর্ভাব। দেশটির প্রতিবেশী দেশ কঙ্গোতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে।

২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সেখানে প্রায় ২,৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়। রাজধানী কাম্পালা হলো দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর এবং একটি প্রধান ট্রানজিট হাব।

এখানে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বসবাস। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে এই রোগ প্রতিরোধের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে উগান্ডা।

ইবোলা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে নির্গত তরল ও কলা থেকে ছড়ায়। এই ভাইরাসের সংক্রমণে তীব্র মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, রক্তবমি এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *