উগান্ডার বিরোধী দলের এক কর্মীকে দেশটির সামরিক প্রধানের হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, এড্ডি মুতবে নামের ওই ব্যক্তিকে অপহরণের পর আদালতে হাজির করা হলে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুতবে উগান্ডার প্রধান বিরোধী নেতা, ববি ওয়াইনের নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে পরিচিত। জানা গেছে, গত ২৭শে এপ্রিল রাজধানী কাম্পালার কাছে সশস্ত্র ব্যক্তিরা মুতবেকে অপহরণ করে।
এরপর উগান্ডার সামরিক প্রধান মুহুজি কাইনেরুগাবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, তিনি মুতবেকে আটক করেছেন। এমনকি, মুতবেকে ‘খুবলে ধরা ঘাসফড়িংয়ের’ সঙ্গে তুলনা করে তাকে ‘মারধর’ করার কথাও উল্লেখ করেন কাইনেরুগাবা।
আদালতে মুতবেকে হাজির করার পর দেশটির বিচারমন্ত্রী নরবার্ট মাও জানান, মুতবেকে দুর্বল দেখাচ্ছিল এবং তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘বেআইনিভাবে আটক, নির্যাতিত ও নিপীড়িত’ সন্দেহভাজনদের আদালতে হাজির করা বিচারিক প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন।
যদিও মুতবেকে নির্যাতনের জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী করেননি তিনি। মুতবে’র আইনজীবী মাগেলান কাজিবওয়ে সাংবাদিকদের জানান, তার মক্কেলকে প্রতিদিন নির্যাতন করা হয়েছে এবং বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ববি ওয়াইন, যিনি রবার্ট কায়াগুলা news নামেও পরিচিত, আসন্ন নির্বাচনের আগে ‘প্রতিবাদী ভোট’ প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ববি ওয়াইন এক টুইট বার্তায় জানান, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে।
মুতবে’র অপহরণের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উগান্ডায় কীভাবে আইন ও শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, এটি তারই প্রমাণ।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাইনেরুগাবাকে তার ৮০ বছর বয়সী বাবার উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কাইনেরুগাবা প্রায়শই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য করে থাকেন। এমনকি, ববি ওয়াইনকে হত্যার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
উগান্ডা সরকার এর আগেও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অপহরণের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মুতবে’র অপহরণকে ভিন্নমত দমনের একটি অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তারা মনে করে, এটি তরুণ প্রজন্মের স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করার চেষ্টা। উগান্ডা মানবাধিকার কমিশন কর্তৃপক্ষের প্রতি মুতবেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা