যুক্তরাজ্য (ইউকে) এবং ভারতের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর এই চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই চুক্তির ফলে ২০৪০ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রায় ৪৮০ কোটি পাউন্ড যোগ হবে। এছাড়াও, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণও ২৫৫০ কোটি পাউন্ড পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই বাণিজ্য চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের হুইস্কি এবং গাড়ির মতো পণ্যের উপর ভারতের শুল্ক কমানো হবে, যা ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের জন্য লাভজনক হবে।
উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় বাজারে স্কচ হুইস্কির উপর বিদ্যমান ১৫০ শতাংশ শুল্ক ১০ বছরের মধ্যে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। একইভাবে, ব্রিটিশ গাড়ির উপর শুল্ক ১০০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে ভারতীয় পোশাক, জুতা এবং খাদ্য পণ্যের শুল্ক কমানো হবে, যার ফলে ব্রিটিশ ভোক্তারা তুলনামূলকভাবে সস্তায় এসব পণ্য কিনতে পারবে।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে, উভয় দেশই সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর ফলে, যেসব ভারতীয় কর্মী স্বল্প সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে কাজ করছেন, তাদের জাতীয় বীমা খাতে আগামী তিন বছর পর্যন্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে না।
একই সুবিধা পাবেন যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে যাওয়া কর্মীরাও।
বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি, দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়েও আলোচনা চলছে। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য এবং ভারতের মধ্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
এই চুক্তিকে যুক্তরাজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে। যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কেইর স্টারমার বলেছেন, এই চুক্তি দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ব্রিটিশ নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবে।
চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে তা বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তির ফলে শুধু যুক্তরাজ্য ও ভারতের মধ্যে নয়, বরং অন্যান্য দেশের সঙ্গেও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সহজ হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরাও এই চুক্তির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করছেন এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের মতে, এই ধরনের চুক্তি বিশ্ব বাণিজ্য কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে পারে এবং বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান