যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ইয়েমেনে বোমা, হতবাক বিশ্ব!

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ বিমান হামলা, লক্ষ্য ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি।

ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে বিমান হামলা চালিয়েছে। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের মতে, এই হামলায় হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন তৈরির কারখানাগুলো লক্ষ্য করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাতের বেলা সানা থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে এই হামলা চালানো হয়। তাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো হলো– যেগুলোতে লোহিত সাগরে নৌযানের ওপর হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন তৈরি করা হতো।

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমাতে অভিযানটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে হতাহতের কোনো সংখ্যা তারা জানায়নি।

গত ১৫ মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র হুতি বিদ্রোহীদের ওপর কয়েকশ হামলা চালিয়েছে। তবে এই যৌথ অভিযান নিয়ে তারা এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন, লোহিত সাগরে নৌপরিবহন অব্যাহত থাকলে হুতিদের বিরুদ্ধে “দৃঢ় ও শক্তিশালী” হামলা চালাতে হবে। এরপর পেন্টাগন জানায়, তারা ইয়েমেনে ১ হাজারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, যার ফলে “হুতি যোদ্ধা ও নেতাদের হত্যা করা হয়েছে এবং তাদের সক্ষমতা হ্রাস করা হয়েছে”।

তবে এসব হামলায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। হুতি সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবারের এক হামলায় আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি আটক কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে ৬৮ জন নিহত হয়েছে।

সানায় অবস্থিত মানবাধিকার সংস্থা ‘মওয়াতানা ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় আরও কয়েকশ বেসামরিক হতাহতের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।

সংস্থাটির চেয়ারপারসন রাধিয়া আল-মুতাওয়াক্কেল বলেন, “এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাতে ইয়েমেনি বেসামরিক নাগরিকরা বিভিন্ন পক্ষের নির্বিচার ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হামলার শিকার হচ্ছেন। যখন তারা তাদের জীবনের এই রক্তাক্ত অধ্যায়ের সমাপ্তি আশা করছিলেন, তখন তারা এখন মার্কিন বাহিনীর হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোমবারের হামলায় বেসামরিক হতাহতের অভিযোগের বিষয়টি পেন্টাগন অবগত আছে এবং তারা এ বিষয়ে মূল্যায়ন করছে।

উল্লেখ্য, হুতি বিদ্রোহীরা প্রায় এক দশক ধরে ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নৌযানের ওপর হামলা চালাচ্ছে এবং এর ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *