যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিমান হামলা শুরু করেছে। বুধবার (গতকাল) হওয়া এই হামলায় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীও যুক্ত হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান তীব্র অভিযানের অংশ।
জানা গেছে, ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ১৫ই মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিযান শুরু করার পর এই প্রথম যুক্তরাজ্য সরাসরিভাবে এতে অংশ নিল।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল লোহিত সাগরে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি বলেন, “হুতিদের ক্রমাগত হুমকির কারণে নৌ-চলাচলে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়েছে।
এর ফলস্বরূপ, ইতিমধ্যে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে এবং যুক্তরাজ্যের পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ বিভিন্ন স্থানে হুতি বিদ্রোহীরা তাদের ঘাঁটি গেড়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় হুতিদের ব্যবহৃত একটি ড্রোন তৈরির কারখানা লক্ষ্য করা হয়েছে, যা সানার প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
এই হামলায় রয়্যাল এয়ার ফোর্স-এর টাইফুন এফজিআর৪ যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং ‘পেওয়ে ফোর’ গাইডেড বোমা ব্যবহার করা হয়। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বেসামরিক হতাহতের সম্ভাবনা কমাতে রাতের বেলা এই হামলা চালানো হয়।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও এই অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে। তাদের দুটি বিমানবাহী জাহাজ, ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যান লোহিত সাগরে এবং ইউএসএস কার্ল ভিনসন আরব সাগরে অবস্থান করছে।
যুক্তরাষ্ট্র হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালাচ্ছে, কারণ তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে এবং ইসরায়েলে আক্রমণ করছে। উল্লেখ্য, হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের মদদপুষ্ট একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা প্রায়ই ইসরায়েলে হামলা চালায়।
তবে, এই হামলাগুলোর কারণে ইতোমধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে, একটি মার্কিন হামলায় আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি বন্দীশালায় অন্তত ৬৮ জন নিহত এবং ৪৭ জন আহত হয়।
এছাড়া, ১৮ই এপ্রিল রাস ইসা তেল বন্দরে চালানো এক হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭০ জনের বেশি আহত হয়।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরের এই অস্থিরতা বিশ্ব বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই রুটে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হলে, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও তার প্রভাব পড়তে পারে এবং বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান