যুক্তরাজ্যে ফিরতেই দুঃসংবাদ! ইউরোপ থেকে আনা যাবে না মাংস ও দুগ্ধ?

যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত নতুন এক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন থেকে, যারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে গ্রেট ব্রিটেনে (ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস) আসবেন, তাদের জন্য মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য আনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তটি মূলত গবাদি পশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়ানো রোগ, ‘ফুট-অ্যান্ড-মাউথ ডিজিজ’ (FMD) প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার থেকে কার্যকর হওয়া এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ব্রিটেন ভ্রমণে আসা পর্যটকদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গরুর মাংস, ভেড়া, ছাগল বা শূকরের মাংস অথবা দুগ্ধজাত কোনো পণ্য, যেমন – পনির বা দুধ জাতীয় খাবার সাথে আনা যাবে না। এমনকি, কেউ যদি স্যান্ডউইচ অথবা এই ধরনের কোনো খাবার সঙ্গে নিয়ে আসেন, তাহলেও তা গ্রহণ করা হবে না।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে কড়া নজর রাখবে।

ফুট-অ্যান্ড-মাউথ ডিজিজ (FMD) মানুষের শরীরে সরাসরি প্রভাব ফেলে না, তবে এটি গবাদি পশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই রোগটি খুব দ্রুত ছড়ায় এবং খামারিদের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

যদিও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে এই রোগের কোনো প্রাদুর্ভাব নেই, তবুও সরকার আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউরোপে এই রোগের বিস্তার ‘খামার ব্যবসা এবং পশুসম্পদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি’ তৈরি করেছে। এর ফলে আক্রান্ত পশুদের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পশু, মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহ করতে না পারার মতো সমস্যা হতে পারে।

এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় কিছু বিশেষ ছাড়ও রয়েছে। শিশুদের খাবার, বিশেষ স্বাস্থ্য বিষয়ক খাবার এবং কিছু মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য, যেমন – চকোলেট, মিষ্টান্ন, রুটি, কেক, বিস্কুট ও পাস্তা আনার ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

যদি কোনো যাত্রী নিষিদ্ধ পণ্য নিয়ে আসেন, তাহলে সেইগুলো সীমান্তেই জমা দিতে হবে অথবা জব্দ করা হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে, এই নিয়ম ভাঙলে ইংল্যান্ডে ৫,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার সমান।

যুক্তরাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তা এবং গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রী ড্যানিয়েল জেইচনার বলেছেন, “আমরা ব্রিটিশ কৃষকদের ফুট-অ্যান্ড-মাউথ ডিজিজ থেকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। এই কারণে, রোগের বিস্তার রোধ এবং ব্রিটেনের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগতভাবে মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হচ্ছে।”

এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-প্রধান পশুচিকিৎসক জোর্জ মার্টিন-আলমাগ্রো বলেছেন, “আমরা ইতিমধ্যেই এই রোগের ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য শক্তিশালী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, যা কৃষক ও ব্রিটেনের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষা করবে।

এই সুরক্ষা ব্যবস্থা, যা আমরা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি, FMD-এর বিস্তার সীমিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” তিনি গবাদি পশু পালনকারীদের প্রতি রোগের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে পশু ও উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *