ভোট কারচুপির অভিযোগে যুক্তরাজ্য: রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা!

ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে মলদোভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। বুধবার (২৭ মার্চ) ব্রিটিশ সরকার জানায়, ‘ইভরাজিয়া’ নামক এই রুশ সংগঠনটি মলদোভার গণতন্ত্রকে দুর্বল করতে এবং দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সদস্যপদ লাভের পথে বাধা দিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তর (এফসিডিও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার মূল উদ্দেশ্য হলো মলদোভার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করা এবং রাশিয়ার প্রভাব বিস্তার রোধ করা।

যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইভরাজিয়া গ্রুপের সম্পদ জব্দ করা হবে এবং এর প্রতিষ্ঠাতা নেলি পারুতেনকো ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নাতালিয়া পারাস্কা’র যুক্তরাজ্যে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, “যখন অবৈধ অর্থের অবাধ প্রবাহ ঘটে, তখন তা জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়, অর্থনীতির ক্ষতি করে এবং খারাপ উদ্দেশ্যে কাজ করা ব্যক্তিদের আইনের শাসনকে দুর্বল করতে সহায়তা করে।”

মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ করার চেষ্টা করলে তার ফল ভোগ করতে হবে।

এফসিডিও আরও জানিয়েছে, ইভরাজিয়া সংগঠনটি মলদোভার পলাতক এক অলিগার্ক ইলান শোরের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। যুক্তরাজ্য ২০২২ সালেই শোরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) গত অক্টোবরে ইভরাজিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। মলদোভার পুলিশ জানিয়েছে, ইভরাজিয়া প্রায় ১৩০,০০০ নাগরিককে অর্থ দিয়েছে, যার পরিমাণ ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এই অর্থের পরিমাণ ছিল মাসিক ৫০ ডলার থেকে শুরু করে ২,৫০০ ডলার পর্যন্ত।

এদিকে, মলদোভার প্রধানমন্ত্রী ডরিন রেসেন জানিয়েছেন, গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ইইউতে যোগদানের প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রভাব বিস্তারের জন্য রুশ এজেন্টরা প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো (২১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ করেছে।

তিনি আরও বলেন, “ক্রেমলিনের এজেন্টরা আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ব্যাপক ভোট কেনার অভিযান শুরু করেছিল, যার ফলস্বরূপ প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছে।”

মলদোভা সরকার দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে রাশিয়া তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত এই দেশটিকে নিজেদের প্রভাবের মধ্যে রাখা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউতে যোগদানের প্রক্রিয়াকে বাধা দেওয়া।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *