অবশেষে! কয়েকদিনের মধ্যে ফ্রান্স ফেরত পাঠানো শুরু করবে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য সরকার ফ্রান্সের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তির অধীনে কয়েক দিনের মধ্যে ছোট নৌকায় আসা কিছু অভিবাসীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে শুরু করতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার এই চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন কমানোর বৃহত্তর পরিকল্পনার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

নতুন চুক্তি অনুসারে, ফ্রান্স যুক্তরাজ্যে ছোট নৌকায় করে আসা নথিবিহীন ব্যক্তিদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। এর বিনিময়ে যুক্তরাজ্য তাদের পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সংযোগ রয়েছে এমন সমান সংখ্যক বৈধ আশ্রয়প্রার্থীকে গ্রহণ করবে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘এক জন আসলে এক জন ফেরত’।

গত মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ‘এক জন আসলে এক জন ফেরত’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন।

২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ২৫,০০০ জনের বেশি মানুষ ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে। স্টারমার চোরাচালান চক্রকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যাতে আগমনের সংখ্যা কমানো যায়। গত বছর নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের পর স্টারমারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। তিনি নাইজেল ফ্যারেজের নেতৃত্বাধীন ‘রিফর্ম ইউকে’ পার্টির কাছ থেকে ছোট নৌকার আগমন বন্ধ করার জন্য চাপ অনুভব করছেন।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডে ছোট নৌকায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হোটেলগুলোর সামনে অভিবাসন বিরোধী এবং অভিবাসনপন্থী উভয় দল বিক্ষোভ করেছে।

ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেইলো টুইটারে (X) বলেছেন, দেশগুলোর মধ্যে নতুন চুক্তির একটি ‘স্পষ্ট লক্ষ্য’ রয়েছে, আর তা হলো মানব পাচার নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া। যদিও ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানাননি, এই প্রকল্পের অধীনে কতজন মানুষকে ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘ফেরতের সংখ্যা প্রথমে কম থাকবে এবং পরে তা বাড়ানো হবে।’ ফেরত পাঠানো ব্যক্তিরা হবেন তারাই, যারা সরাসরি ছোট নৌকায় করে এসেছেন, যুক্তরাজ্যে থাকা অন্য কেউ নন।

সরকারের সূত্রগুলো আগে জানিয়েছিল, এই চুক্তিতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ জন অর্থাৎ বছরে ২,৬০০ জনকে ফেরত পাঠানো হবে। যদিও গত বছর ৩৫,০০০ জনের বেশি অভিবাসী এসেছে।

এই প্রকল্পের সমালোচকরা বলছেন, এটি প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট হবে না। তবে কুপার বলেছেন, ফ্রান্সের সঙ্গে এই চুক্তি সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনার একটি অংশ।

সরকার মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বন্ধ করেছে এবং অভিবাসীদের প্রায়শই দেওয়া অবৈধ কাজের সুযোগ বন্ধ করতে ডেলিভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে।

গত সপ্তাহে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত তা ঘোষণা করা হয়নি। যুক্তরাজ্য বলেছে, ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলো এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *