যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ: ব্রিটিশ পাঙ্ক ব্যান্ড ইউকে সাবসের সদস্যদের কী হলো?

ব্রিটিশ পাঙ্ক রক ব্যান্ড ইউকে সাবস-এর সদস্যদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ব্যান্ডের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, তাদের আটকও করা হয়েছিল।

ইউকে-র একটি সংবাদ ওয়েবসাইটে (Dorset Eye) বৃহস্পতিবার এই ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন ব্যান্ডের বেসিস্ট অ্যালভিন গিবস। সম্প্রতি সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, এমনটাই শোনা যাচ্ছে।

এর মধ্যে ফ্রান্সের একজন বিজ্ঞানীও রয়েছেন, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন, যে কারণে তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

গিবস, তাঁর সহকর্মী মার্ক কেরি এবং স্টেফান হাবেলিনকে আটকের পর যুক্তরাজ্যে ফেরত পাঠানো হয়। শুধুমাত্র ভোকালিস্ট চার্লি হারপারকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

পরে হারপার লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি কনসার্টে অন্য কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে দলের হয়ে পারফর্ম করেন।

গিবস জানান, লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, ভিসা সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি ছিল এবং অন্য একটি কারণও ছিল, যা তারা জানাতে রাজি হয়নি।

গিবসের ধারণা, মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি তাঁর “অসম্মানজনক” মন্তব্যের কারণে এমনটা হয়েছে।

ব্রিটিশ পাঙ্ক রক ঘরানার অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত ইউকে সাবস অতীতে ট্রাম্প এবং তাঁর নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে এবং লাইভ পারফরম্যান্সে প্রায়ই রাজনৈতিক মন্তব্য করে থাকে।

গিবস বলেন, “এর পরের ঘটনাগুলো ছিল খুবই কষ্টের।” দুজন পুলিশ অফিসার আমাকে বিমানবন্দরের অন্য একটি অংশে নিয়ে যায়, যেখানে স্টেফান ও মার্ককে একটি ঠান্ডা আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল।

সেখানে কলম্বিয়া, চীন ও মেক্সিকোর আরও কিছু আটক ব্যক্তি ছিল। আমার লাগেজ, ফোন এবং পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর প্রায় ৭ ঘণ্টা পর, ভোর ৪টার দিকে তাঁকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। গিবসের সঙ্গিনী ২৫ ঘণ্টা ধরে তাঁর মুক্তির জন্য অপেক্ষা করেছিলেন।

তিনি আরও জানান, “পরের দিন রাত ৮টায় যখন বিমানে তুলে দেওয়া হয়, তখন আমি প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে না ঘুমিয়ে ছিলাম।” শুধু একটি নুডলস ও কয়েক কাপ চা খেয়েছিলাম।

হারপার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারায় এবং কনসার্ট করতে পারায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করলেও, গিবস সম্ভবত আর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে চান না।

তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে দেশটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক আপাতত এখানেই শেষ।

ইউকে সাবস-এর সদস্যদের এই অভিজ্ঞতা, ভিসা সংক্রান্ত অস্পষ্টতার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়া এবং আটকের শিকার হওয়া মানুষের দীর্ঘ তালিকার সর্বশেষ উদাহরণ।

একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে এক ফরাসি গবেষকের সঙ্গেও। সম্প্রতি বিমানবন্দরে তাঁর ফোন পরীক্ষা করার সময় ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে পাঠানো কিছু বার্তা পাওয়া যায়।

এর পরেই তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রী ফিলিপ বাপতিস্ত এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “মার্কিন কর্তৃপক্ষ সম্ভবত এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ গবেষকের ফোনে তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে এমন কিছু বার্তা ছিল, যেখানে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা নীতির বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *