যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে এবং ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি গাজায় মানবিক পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তি সত্ত্বেও, ইসরায়েল সরকার যদি পশ্চিম তীর ও গাজায় ‘গুরুতর নীতি’ অনুসরণ করে, তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
ল্যামি আরও বলেন, বিশ্ব এখন ইসরায়েলের বিচার করছে।
এই পদক্ষেপের আগে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং কানাডা যৌথভাবে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে গাজায় যুদ্ধের পরিচালনা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কার্যক্রমের নিন্দা জানায়। বিবৃতিতে তিনটি দেশ ইসরায়েলকে মানবিক সহায়তা সরবরাহ সহজ করার আহ্বান জানায়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেইর স্টারমার গাজায় শিশুদের দুর্দশা ‘অসহনীয়’ উল্লেখ করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যেই আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি, আরও তিনজন ব্যক্তি, দুটি অবৈধ বসতি এবং ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে সমর্থনকারী দুটি সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ল্যামি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল সরকারের প্রত্যক্ষ সমর্থনে পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন দ্রুত বাড়ছে।
জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার গাজায় সরবরাহ করা ত্রাণকে ‘প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।
গাজায় খাদ্য ও জরুরি সরবরাহ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজায় ১১ সপ্তাহের অবরোধকে ‘নির্মম ও সমর্থনযোগ্য নয়’ বলে অভিহিত করেছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং মানবিক সহায়তার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন।
ফ্রান্স এরই মধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে।
আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, এই ধরনের বিবৃতি হামাসের জন্য ‘বিরাট পুরস্কার’।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস