যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই কিয়েভের উপর হামলা! শান্তি নিয়ে রাশিয়ার ভণ্ডামি ফাঁস?

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আবহে আবারও নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের সুমি শহরে গুরুতর আহত হয়েছেন বহু মানুষ, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

কিয়েভ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মস্কোর শান্তি আলোচনার প্রস্তাবকে ‘ফাঁকা বুলি’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

সম্প্রতি, সৌদি আরবে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয়পক্ষই একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে।

আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল, কিভাবে ইউক্রেনের উপর হামলা বন্ধ করা যায় এবং সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাঁর ভাষণে বলেন, “প্রতিদিন, এমনকি রাতের বেলাতেও, যখন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন আমাদের দেশের উপর আঘাত হানে, তখন যুদ্ধ আমাদের জন্য কেবল ধ্বংস ডেকে আনে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দিমিত্রি কুলেবা বলেন, “শান্তি নিয়ে ফাঁকা বুলি আওড়ানোর পরিবর্তে, রাশিয়ার উচিত অবিলম্বে আমাদের শহরগুলোতে বোমা হামলা বন্ধ করা এবং বেসামরিক নাগরিকদের উপর যুদ্ধ বন্ধ করা।”

আলোচনা চলাকালীন, জানা যায় যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশের মধ্যে একটি সীমিত যুদ্ধবিরতি স্থাপনের চেষ্টা করছেন।

যদিও এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি, তবে আলোচনা এখনো চলছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা গেলে তা শক্তি অবকাঠামোর উপর হামলা বন্ধ করতে সহায়ক হবে।

তবে, এই যুদ্ধবিরতি কত দিন স্থায়ী হবে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এর প্রভাব কতটা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এদিকে, মার্কিন কর্মকর্তারাও ইউক্রেনের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করছেন।

কৃষ্ণ সাগরে নৌ-চলাচল নিরাপদ করার জন্য তারা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও আলোচনা করছেন।

তবে, শান্তি আলোচনা যত এগিয়েছে, ততই জটিলতা বাড়ছে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কঠিন শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা ইউক্রেন এবং তার মিত্রদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি সামরিক সাহায্য বন্ধ করা, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করা এবং ২০১৪ সালে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা চারটি অঞ্চলের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শান্তি আলোচনার পথ এখনো অনেক দূরের। রাশিয়ার এই আগ্রাসী মনোভাবের কারণে দ্রুত কোনো সমাধানে আসা কঠিন।

পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *