যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি আরবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে, তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর শর্তাবলী রাশিয়ার পক্ষেই বেশি ঝুঁকে রয়েছে।
চুক্তির ফলে রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা ইউক্রেনের জন্য উদ্বেগের কারণ।
চুক্তি অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগরে উভয় দেশ একে অপরের জাহাজকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকবে। এই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় নৌ-ড্রোন এবং বিশেষ বাহিনীর তৎপরতা রাশিয়ার নৌবহরকে অনেকটা কোণঠাসা করে ফেলেছিল।
কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কৃষি পণ্য ও সারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে, সেই সঙ্গে রাশিয়ার একটি প্রধান রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, ‘রোজেলখোজ ব্যাংক’-এর উপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ব্যাংকটি রাশিয়ার কৃষি শিল্পে অর্থ সরবরাহ করে থাকে।
যদি এমনটা হয়, তবে ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাসমূহ শিথিল করার এটিই হবে প্রথম পদক্ষেপ। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য দুটি শর্ত চাইছে: এক, ইউক্রেন যেন সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে কিছু ছাড় দেয় এবং দুই, আন্তর্জাতিকভাবে যে একঘরে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা থেকে মুক্তি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই চুক্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে তা ইউক্রেনের অবস্থানকে দুর্বল করবে।
জেলেনস্কি আরো বলেছেন, যদি রাশিয়া যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তবে কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানাতে পারে।
তবে, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্ভবত রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিরা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় অনেক বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এমন একটি চুক্তি, যা উভয় পক্ষের জন্যই সুবিধাজনক না হয়, তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই চুক্তি এবং এর সঙ্গে জড়িত বিবৃতিগুলো, ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা নিয়ে আরও বেশি সন্দেহ তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান