যুদ্ধবিরতির আলোচনা: রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশার ফারাক!

যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা, মতের অমিল স্পষ্ট

সৌদি আরবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রত্যাশা নিয়ে এখনো বড় ধরনের ফারাক রয়েছে।

আলোচনার শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চেয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, মস্কো আলোচনার পথ কঠিন হবে বলে সতর্ক করেছে।

আলোচনায় প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে— জ্বালানি অবকাঠামো এবং কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচল বিষয়ক একটি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা।

এছাড়া, ইউক্রেন থেকে শিশুদের রাশিয়া নিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

আলোচনায় মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তিনি জানান, পুতিন শান্তি চান বলেই মনে হয়।

তবে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, আলোচনার পথ এখনো অনেক বাকি।

আলোচনায় শস্য চুক্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তিটি ২০২২ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির পথ সুগম করে।

রাশিয়া এই চুক্তি থেকে ২০২৩ সালে বেরিয়ে আসে।

যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই উভয় পক্ষই আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রুশ ড্রোন হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে।

এর জবাবে ইউক্রেনীয় বাহিনীও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের ছোড়া ৫৯টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

আলোচনার প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি সাবেক ফক্স নিউজ উপস্থাপক টাকার কার্লসনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্টিভ উইটকফ পুতিনের প্রতি তার মুগ্ধতার কথা জানান।

উইটকফ বলেছেন, তিনি পুতিনকে খারাপ লোক হিসেবে মনে করেন না এবং তিনি খুবই বুদ্ধিমান।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো— যুদ্ধ বন্ধ করা এবং ধ্বংসযজ্ঞ থামানো।

তবে, ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া নিজেদের দখলে নিয়েছে, সেসব অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা চলছে।

উইটকফ অবশ্য বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন।

তিনি রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন এবং বিতর্কিত গণভোটের মাধ্যমে সেখানকার জনগণের ইচ্ছার কথা তুলে ধরেছেন।

আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য অনেক।

এটি স্পষ্ট যে, যুদ্ধ বন্ধ করা এবং শান্তি ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *