ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মন্ত্রীদের মধ্যে সম্প্রতি ব্রাসেলসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
তবে, ইউক্রেনের জন্য অত্যাধুনিক ‘টোমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বৈঠকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা বাড়বে।
এই সহায়তা ‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ইউক্রেনীয় চাহিদা তালিকা’ (PURL) নামক একটি নতুন প্রকল্পের অধীনে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে ইউক্রেনকে সামরিক সরঞ্জামের জন্য দুই বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
বুধবারের বৈঠকে ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলো আরও অর্থ সহায়তা দিতে পারে।
ইউক্রেন আশা করছে, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে অত্যাধুনিক ‘টোমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে পারবে। তবে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে, বিশেষ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর এটি নির্ভর করছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছেন, যা রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানতে এবং সম্ভবত মস্কোর ওপরও হামলা চালাতে সক্ষম। জানা গেছে, শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠকের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এদিকে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান বিভিন্ন সময়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। সম্প্রতি পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন প্রবেশ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্রিটেন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে এক লক্ষ ড্রোন সরবরাহ করবে। এছাড়া, নেদারল্যান্ডস ইউক্রেনকে নিজস্ব ড্রোন তৈরির জন্য ৯০ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেছেন, রাশিয়ার এই ধরনের কর্মকাণ্ড ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন, বিপজ্জনক এবং সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’। তিনি আরও জানান, ব্রিটিশ বিমানবাহিনী পোল্যান্ডের আকাশসীমায় তাদের টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
তবে, ডাচ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুবেন ব্রেকেলম্যানস মনে করেন, রাশিয়ার মোকাবিলায় কেবল যুদ্ধবিমান যথেষ্ট নয়। ফিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্তি হাক্কানেন সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলেও রাশিয়া ভবিষ্যতে ইউরোপের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং সীমান্ত এলাকায় সৈন্য সমাবেশের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন