ঐতিহাসিক! ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি, কী জানালেন জেলেনস্কি?

ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত একটি খনিজ সম্পদ চুক্তিকে “ঐতিহাসিক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা দেশটির শিল্প ও আইনি কাঠামোকে আধুনিকীকরণে সাহায্য করবে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই চুক্তিটি ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি “সমান অংশীদারিত্ব” তৈরি করেছে।

চুক্তিটি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। জেলেনস্কি জানান, এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনে বড় ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশটির শিল্পখাতকে আধুনিকীকরণে সাহায্য করবে এবং একইসাথে দেশের আইন কাঠামোরও উন্নতি হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ফলপ্রসূ আলোচনার পরেই এই চুক্তির চূড়ান্ত রূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

অন্যদিকে, কিয়েভ স্কুল অফ ইকোনমিকসের প্রেসিডেন্ট টিমফি মাইলোভানোভ এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ইউক্রেন “চুক্তিটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে”। তিনি আরও যোগ করেন, “চুক্তির চূড়ান্ত রূপটি ন্যায্য”।

উল্লেখযোগ্যভাবে, চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পূর্বে দেওয়া সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনকে খনিজ সম্পদ পরিশোধ করার যে দাবি ছিল, সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

এই চুক্তির বিষয়ে ক্রেমলিন এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ দাবি করেছেন, এর মাধ্যমে ট্রাম্প “কিয়েভ সরকারকে ভেঙে দিয়েছেন”। কারণ, ইউক্রেনকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার জন্য খনিজ সম্পদ দিতে হবে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক সাক্ষাৎকারে জানান, এই চুক্তি “রাশিয়ার নেতৃত্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে”।

তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে আরও শক্তিশালী অবস্থানে থেকে আলোচনা করতে পারবেন।

এদিকে, এই চুক্তির ফলস্বরূপ, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রথম অনুমোদন দিতে যাচ্ছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে “৫০ মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি” মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ও পরিষেবা রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় গভর্নর ইভান ফিওডোরভ জানান, জাপোরিঝিয়া শহরে চালানো অন্তত ১০টি হামলায় আবাসিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৭তম দফা নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নয়েল বারোত জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে শান্তির পথে “একমাত্র বাধা”।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *