সামরিক আইন: ইউক্রেনে যুদ্ধের ভয়াবহতা, বাড়ছে উদ্বেগ!

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকার মধ্যে দেশটির সংসদ আরও তিন মাসের জন্য যুদ্ধকালীন আইন ও সেনা সমাবেশ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে আগামী ৬ই আগস্ট পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে।

ইউক্রেনের আইনপ্রণেতারা বিপুল ভোটে এই প্রস্তাব অনুমোদন করেন, যেখানে ৩৫৭ জন সদস্য এর পক্ষে ভোট দেন, বিপক্ষে ছিল মাত্র একজন। একইসাথে, সেনা সমাবেশ বহাল রাখার প্রস্তাবও পাশ হয়, যেখানে ভোট পড়েছিল ৩৫৬-১।

সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নির্বাচনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণের আহ্বান জানানো হলেও, ইউক্রেন সরকার এখনই সেই পথে হাঁটছে না।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি এমনকি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের কথাও উল্লেখ করেছেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কিয়েভকে “অস্থিতিশীল কাঠামো” টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেলেনস্কিকে “নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচারী” হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। যদিও ইউক্রেনীয় জনগণের মধ্যে তাদের নেতার প্রতি সমর্থন এখনো ব্যাপক।

যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার বিমান হামলার মধ্যে ইউক্রেন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওডেসার কৃষ্ণসাগর বন্দরে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় তিনজন আহত হয়েছে এবং ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে ভোরে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলন্দাজ হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় কালিনোভ গ্রামটি দখল করেছে। অন্যদিকে, রাশিয়া অভিযোগ করেছে যে ইউক্রেন তাদের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ছয়টি হামলা চালিয়েছে, যদিও উভয় পক্ষই এমন হামলার ওপর ৩০ দিনের বিরতি দিতে রাজি হয়েছিল।

এই বিরতি বুধবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

পেছনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন আইন দীর্ঘায়িত হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বাড়ছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কোসহ বিরোধী দলের নেতারাও বর্তমান সরকারের সমালোচনা করছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *