কৃষ্ণ সাগর চুক্তি: শস্য বাজার থেকে লাভবান হতে চায় রাশিয়া, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে নৌ নিরাপত্তা বিষয়ক একটি চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যার মাধ্যমে রাশিয়া শস্য বাজার এবং সার ব্যবসায় পুনরায় প্রবেশ করতে চাইছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো শস্য ও সারের বাজারকে স্থিতিশীল করা, যাতে রাশিয়া লাভজনকভাবে ব্যবসা করতে পারে।
একইসঙ্গে, তারা আফ্রিকা এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও আগ্রহী।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়া এবং ইউক্রেন কৃষ্ণ সাগরে শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। সৌদি আরবে মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃষি পণ্য রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে, সমুদ্র পথে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে না।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এই চুক্তি কার্যকর করার জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রয়োজন নেই। তিনি মনে করেন, এটি ইউক্রেনের অবস্থানকে দুর্বল করবে।
জেলেনস্কি আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে মস্কোর ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সরবরাহের জন্য অনুরোধ করবেন।
আলোচনার প্রেক্ষাপটে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন প্রতিনিধির সমালোচনা করেছেন, যিনি রাশিয়ার চারটি অধিকৃত অঞ্চলে গণভোটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জেলেনস্কি মনে করেন, ওই প্রতিনিধির মন্তব্যগুলো ক্রেমলিনের বার্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
এদিকে, ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে রাশিয়া তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তারা জানিয়েছে, এই কেন্দ্রটি তাদের এবং এর নিয়ন্ত্রণ ইউক্রেন বা অন্য কোনো দেশের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে, এস্তোনিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক মনে করেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় রাশিয়া কিছুটা এগিয়ে আছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আলোচনার সময়সীমা নির্ধারণের কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গাস শাহনা বলেছেন, “কিছুটা হলেও, পুতিন এখন সুবিধাজনক অবস্থানে।
এছাড়াও, ইউক্রেনের উপকূলীয় শহর মাইকোলাইভে জরুরি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে সাতটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
অন্যান্য খবরে জানা গেছে, রাশিয়ার একটি আদালত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এক নারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
একইসাথে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) একজন সেনাকর্মীকে আটক করেছে, যিনি রাশিয়ার সৈন্যদের কাছে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান