যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব: ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পরেই ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা!

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়ছে। সম্প্রতি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি ফোনালাপ হয়।

ক্রেমলিন জানায়, ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর পুতিন ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ও অন্যান্য স্থাপনায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু এর পরপরই ইউক্রেনে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ঘটনাকে ‘যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার ছোড়া ৪০টির বেশি ড্রোন ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে সুমি শহরের একটি হাসপাতালেও বোমা হামলা চালানো হয়েছে।

জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ার এমন রাতের হামলা আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, অবকাঠামো এবং ইউক্রেনীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ধ্বংস করে দিচ্ছে। পুতিন কার্যত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।”

এদিকে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও ইউক্রেনীয় বাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলের দিকে তাদের অভিযান চলছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (গতকাল) ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্তেও তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বুধবার (আজ) ইউক্রেনের সঙ্গে ১৭৫ জন যুদ্ধবন্দীর মুক্তি ও বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও, গুরুতর আহত ২৩ জন সেনা সদস্যকেও ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জার্মানির পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনো শান্তি চুক্তি সম্ভব নয়।

জার্মানির পার্লামেন্ট ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ৫০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি তহবিল গঠনের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার এই আগ্রাসী মনোভাবের কারণে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আগামী রবিবার (আগামীকাল) সৌদি আরবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পুনরায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায়, রাশিয়ার পক্ষ থেকে দেশটির কিছু অঞ্চলের বিমানবন্দরের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে ড্রোন হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ, কারণ এর ফলে বিশ্ববাজারে খাদ্য ও পোশাকের দাম বাড়ছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *