যুদ্ধ! ট্রাম্পের শাসনামলে রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব, কৌতূহল?

ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ইঙ্গিত, পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগের ছায়া

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ বর্তমানে একটি জটিল মোড় নিয়েছে। একদিকে যেমন যুদ্ধ চলছে, তেমনই বিভিন্ন দেশের মধ্যে কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কগুলো নতুন করে আলোচনায় আসছে। সম্প্রতি, রাশিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফর এবং বিভিন্ন ঘটনা এই জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ওয়াশিংটনে রুশ কর্মকর্তার সফর:

বুধবার, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন গুরুত্বপূর্ণ দূত, কিরিল দিমিত্রিভ, মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। যদিও দিমিত্রিভের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে, তবুও তার এই সফরটি ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম কোনো শীর্ষস্থানীয় রুশ কর্মকর্তা সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন। তবে, ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। দিমিত্রিভের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত।

শুল্ক নীতি এবং অন্যান্য বিষয়:

একই দিনে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাশিয়াকে নতুন করে শুল্ক আরোপের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে, ইউক্রেনের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বিষয়টি অনেককেই বিস্মিত করেছে। এছাড়া, ইউক্রেনের একটি প্রতিনিধি দল খুব শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসতে পারে বলে জানা গেছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং মানবিক সংকট:

যুদ্ধ এখনো চলছে এবং এর প্রভাব ইউক্রেন জুড়ে দেখা যাচ্ছে। ক্রিভি রিহ শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছে। এছাড়া, খারকিভে ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে, যা সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং প্রতিক্রিয়া:

ন্যাটো জোট ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তারা প্রায় ২০ বিলিয়ন ইউরোর সামরিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউক্রেনকে কিভাবে আরও বেশি সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে ব্রাসেলসে মিলিত হয়েছেন। মার্কিন সিনেটররা রাশিয়াকে সমর্থনকারী দেশগুলোর উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন।

রাজনৈতিক অস্থিরতা:

ইউক্রেন সরকার সামরিক সরঞ্জামের কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করেছে। এছাড়া, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের দলের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। পোল্যান্ডে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

উপসংহার:

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ঘটনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক, সামরিক সহায়তা, এবং অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন এই অঞ্চলের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এই পরিস্থিতিতে, শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *