মানবতার গল্প: ইউক্রেনীয় শিল্পীর সুরে কম্পন!

এক জন বিশ্বখ্যাত ইউক্রেনীয় শিল্পী, ভ্যালেন্টিনা গনচারোভা, যিনি তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে জীবনের গভীরতা এবং মানবতার কথা তুলে ধরেন। তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘ক্যাম্পানেল্লি’ (Campanelli) যেন এক সুরের সফর, যা মানুষকে এক ভিন্ন জগতের সন্ধান দেয়।

গনচারোভা কিয়েভে জন্ম গ্রহণ করেন এবং বর্তমানে তিনি এস্তোনিয়ার তাল্লিনে বসবাস করেন। তাঁর সঙ্গীত জীবন শুরু সোভিয়েত রাশিয়ায়, যেখানে তিনি কঠোর প্রশিক্ষণ লাভ করেন।

ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল এবং খুব অল্প বয়সেই তিনি নিজের অসাধারণ প্রতিভার প্রমাণ দেন। তিনি যখন কিশোরী, তখন তাঁর শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলতেন, তাঁর স্মৃতিশক্তি খুব ভালো, এবং তিনি সুরের সূক্ষ্মতা সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন।

গনচারোভার সঙ্গীত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তাঁর গভীর আধ্যাত্মিকতা। তিনি বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাঁর সঙ্গীতে সেই প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যায়। বিশেষ করে বৌদ্ধধর্মের প্রতি তাঁর আগ্রহ অনেক দিনের।

তিনি মনে করেন, সঙ্গীত আত্মার গভীর থেকে আসে, এবং এর মাধ্যমে মানুষ জীবনের আসল মানে খুঁজে পায়।

ক্যাম্পানেল্লি অ্যালবামটি তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটও বেশ গভীর। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর, যখন ইসরায়েলে একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে, তখন গনচারোভা অনুভব করেন, তাঁর নতুন কিছু সৃষ্টি করা উচিত।

এই অ্যালবামের প্রতিটি সুর যেন জীবনের উত্থান-পতন এবং মানুষের ভেতরের অনুভূতির প্রতিচ্ছবি। অ্যালবামটির টাইটেল, ‘ক্যাম্পানেল্লি’, ইতালীয় ভাষায় ‘ঘণ্টা’ বা ‘ঘণ্টা বাজানো ব্যক্তি’-কে বোঝায়, যা জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলমান প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করে।

গনচারোভার সঙ্গীত শুধু তাঁর নিজের সৃষ্টি নয়, এটি একটি বৃহত্তর মানবিক অভিজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি। তিনি শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান রয়েছে।

তাঁর মতে, বর্তমান বিশ্বে শান্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিতে চান।

গনচারোভার সঙ্গীত জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তাঁর স্বামী ইগর জুবকভের সঙ্গে সহযোগিতা। ইগর একজন প্রকৌশলী, যিনি তাঁর সঙ্গীতের ধারণাগুলোকে বাস্তব রূপ দিতে সাহায্য করেন।

তাঁদের এই জুটি সঙ্গীতের জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

ভ্যালেন্টিনা গনচারোভার সঙ্গীত আমাদের জীবনের গল্প বলে, যা একই সাথে গভীর এবং অনুপ্রেরণামূলক। তাঁর সৃষ্টি আমাদের সবার জন্য এক মূল্যবান উপহার।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *