ফিলিস্তিন: উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে স্থগিত জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন!

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট: মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার কারণে জাতিসংঘে সম্মেলন স্থগিত।

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার কারণে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান নিয়ে আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের একটি শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছেন।

খবর অনুযায়ী, আগামী ১৭ থেকে ২০ জুন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ফ্রান্স ও সৌদি আরব যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছিল এবং এতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ম্যাক্রোঁর।

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ আশা করেছিল, এই সম্মেলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা শান্তি প্রক্রিয়া আবার শুরু করা যাবে। কিন্তু বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা জনিত কারণে সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে।

ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ফরাসি সরকার ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স ইসরায়েলের নিরাপত্তা অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে একইসঙ্গে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে।

শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা চালানোর পর ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্রদের, বিশেষ করে ইসরায়েলের সুরক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। তবে তিনি ইরানের ওপর কোনো হামলায় অংশ নেবেন না বলেও উল্লেখ করেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, সম্মেলনের নতুন তারিখ নির্ধারণের জন্য তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করছেন। একইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, কিছু ফিলিস্তিনি প্রতিনিধির সম্মেলনে আসতে সমস্যা হওয়ায় এবং নিরাপত্তা বিষয়ক কারণেও এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

ফ্রান্স ও সৌদি আরবের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূতরা ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আঞ্চলিক নেতারা নিউইয়র্কে সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন না।

ওই চিঠিতে আরও জানানো হয়, আগামী ১৭ জুন সাধারণ পরিষদের হলঘরে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে স্থগিতের বিষয়টি প্রস্তাব করা হবে এবং এতে সবাই যোগ দিতে পারবেন। রাষ্ট্রদূতরা খুব দ্রুতই এই সম্মেলনটি পুনরায় আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী।

ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য হল একটি নিরস্ত্রীকৃত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা এবং অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেবে। তিনি আরও জানান, এই রাষ্ট্রে হামাস নেতাদের কোনো স্থান থাকবে না।

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত, গাজায় যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনিদের পরিস্থিতি—এগুলো সবই একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ম্যাক্রোঁ মন্তব্য করেন।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের এই সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি করা। বর্তমানে ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৫টির বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ফিলিস্তিনিরা তাদের রাষ্ট্র হিসেবে গাজা ও পশ্চিম তীরকে বিবেচনা করে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছেন এবং তার দেশ এই সম্মেলনে অংশ নিতে রাজি হয়নি।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *