চোখের পাতার অস্ত্রোপচার (Upper Blepharoplasty) : নতুন চেহারার স্বপ্ন এবং বাস্তবতা।
সৌন্দর্য সচেতন মানুষের কাছে চোখের পাতার অস্ত্রোপচার বা আপার ব্লেফারোপ্লাস্টি (Upper Blepharoplasty) এখন বেশ পরিচিত একটি নাম। চোখের উপরের চামড়া ঝুলে যাওয়া বা চোখের পাতা ভারী হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই অস্ত্রোপচার করা হয়।
সম্প্রতি, একজন প্রভাবশালী নারী, লিজ অ্যাডামস, এই অস্ত্রোপচার করানোর পর তার অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, যা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
লিজ অ্যাডামস, যিনি মূলত একজন ইনফ্লুয়েন্সার, তার ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার এবং এর পরবর্তী সময়ের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেছেন। অস্ত্রোপচারের আগে তার স্বামীর প্রতিক্রিয়াও তিনি ভিডিওতে দেখিয়েছেন, যা অনেকের কাছে বেশ মজাদার লেগেছে।
অস্ত্রোপচারের পর ১৮ দিনের একটি বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি, যেখানে কিভাবে তার চোখের পাতার চামড়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে, তা দেখা যায়। অস্ত্রোপচারের পর ফোলাভাব এবং ক্ষত চিহ্ন মিলিয়ে যেতে কতদিন লেগেছে, সে সম্পর্কেও তিনি তথ্য দিয়েছেন।
তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের পর নিজেকে আরও সতেজ ও উজ্জ্বল লাগছে।
এই অস্ত্রোপচার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে, আমরা কথা বলতে পারি প্লাস্টিক সার্জন ড. পিটার লি-এর সঙ্গে। তিনি জানান, “বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের উপরের চামড়া স্থিতিস্থাপকতা হারায় এবং ঝুলে যায়।
এর ফলে চোখ ক্লান্ত ও বয়স্ক দেখায়। আপার ব্লেফারোপ্লাস্টি হলো এই অঞ্চলের চামড়ার পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। অতিরিক্ত চামড়া, চর্বি এবং কিছু ক্ষেত্রে পেশি অপসারণ করে চোখের পাতা কে আরও তরুণ এবং সতেজ করে তোলা হয়।”
ড. লি আরও ব্যাখ্যা করেন, “সাধারণত চোখের পাতার স্বাভাবিক ভাঁজ বরাবর একটি ছোট ছিদ্র করে অস্ত্রোপচার শুরু করা হয়। অতিরিক্ত চামড়া এবং চর্বি অপসারণ করা হয়। অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে এবং সেরে উঠতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে। অস্ত্রোপচারের ৫ থেকে ১০ দিন পর সেলাই কেটে দেওয়া হয়।”
যদিও এই অস্ত্রোপচার সাধারণত নিরাপদ, তবে কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন – রক্তক্ষরণ, সংক্রমণ, চোখের শুষ্কতা, চোখের কর্নিয়ার প্রদাহ, চোখের পাতা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে সমস্যা, চামড়ার পরিবর্তন, ক্ষত, দৃষ্টিতে সমস্যা ইত্যাদি।
এই অস্ত্রোপচারের খরচ সম্পর্কে বলতে গেলে, বিভিন্ন স্থানে এর ভিন্নতা দেখা যায়। লিজ অ্যাডামসের অস্ত্রোপচারের খরচ ছিল ৩,৭০০ মার্কিন ডলার। আমেরিকান সোসাইটি অফ প্লাস্টিক সার্জনস-এর তথ্য অনুযায়ী, ব্লেফারোপ্লাস্টি-র গড় খরচ প্রায় ৩,৩৩৯ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় তিন লক্ষ আশি হাজার টাকার মতো।
বর্তমানে, সৌন্দর্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ধরনের অস্ত্রোপচারের চাহিদা বাড়ছে। তবে, যেকোনো অস্ত্রোপচার করার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি ও সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: পিপল ম্যাগাজিন।