শিরোনাম: ‘আর্চিন’: লন্ডনের উদ্বাস্তু জীবন নিয়ে হারিস ডিকিনসনের চলচ্চিত্র
হারিস ডিকিনসন, যিনি অভিনেতা হিসেবে সুপরিচিত, এবার পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ‘আর্চিন’ (Urchin) চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে। লন্ডনের রাস্তায় আশ্রয়হীন মানুষের জীবনযাত্রা এবং সমাজে তাদের টিকে থাকার সংগ্রামকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবে এর প্রিমিয়ার হয়েছে।
ছবিটির মূল চরিত্র মাইক, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফ্রাঙ্ক ডিলান। মাইক একজন ভবঘুরে, যিনি পাঁচ বছর ধরে লন্ডনের রাস্তায় দিন কাটান। ভিক্ষা করা, সামান্য কিছু চুরি করা, এমনকি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের খাবারের ওপর নির্ভর করে তার জীবন চলে। ডিলানের অভিনয় ফুটিয়ে তোলে মাইকের মানসিক অস্থিরতা, সমাজের প্রতি তার ক্ষোভ এবং জীবনের প্রতি তার এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ। অভিনেতা ফ্রাঙ্ক ডিলান, যিনি মাইকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তিনি বুঝিয়ে দেন কীভাবে একজন মানুষ দিনের পর দিন এই ধরনের জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়।
ছবিতে মাইকের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মাদকাসক্তি। সামান্য কিছু অর্থ উপার্জনের পর, সে মাদক কেনে এবং ধীরে ধীরে এই নেশার জালে জড়িয়ে পরে। মুক্তির পরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করলেও, পুরনো অভ্যাসের কারণে তার পক্ষে তা কঠিন হয়ে পরে। একটি হোটেল-এর রান্নাঘরে কাজ পাওয়ার পরে, তার জীবনে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু সমাজের কঠিন বাস্তবতার কারণে, সে আবার সেই পুরোনো জীবনে ফিরে যায়।
ছবিতে, মাইকের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, যেমন – কারাগার, পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এবং প্রতিশোধমূলক বিচার – এই বিষয়গুলো গভীর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও, ছবিতে দেখানো হয়েছে, কিভাবে একজন মানুষ সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে গিয়েও বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়।
ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মেগান নর্থাম। তিনি একজন নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি মাইকের সহকর্মী এবং যিনি নিজের জীবন গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
‘আর্চিন’ চলচ্চিত্রটি শুধুমাত্র একটি সাধারণ সিনেমা নয়, বরং এটি সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরে। এটি আমাদের প্রশ্ন করতে বাধ্য করে – কেন কিছু মানুষ আশ্রয়হীন হয়? কিভাবে তারা এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো সহজে পাওয়া যায় না, তবে ছবিটির গল্প দর্শকদের নতুন করে ভাবতে শেখায়।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান