গাজায় ত্রাণ বিতরণে যুক্তরাষ্ট্রের নয়া ফন্দি! ৬ লক্ষ মানুষকে না খাইয়ে মারার চক্রান্ত?

গাজায় মানবিক ত্রাণ বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা জাতিসংঘের বিরোধিতার মুখে পড়েছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে গাজার মাত্র ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

নতুন এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হল, হামাসের হাত থেকে ত্রাণ বাঁচিয়ে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

হাকাবি জানান, এই ত্রাণ বিতরণের কাজটি করবে একটি নতুন বেসরকারি সংস্থা, যার নাম ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।

তাদের মতে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হবে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সহযোগিতা না করে বরং বিভিন্ন সংকট তৈরি করছে।

বর্তমানে গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট চলছে।

জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা UNRWA জানিয়েছে, খাদ্য, জ্বালানি, চিকিৎসা ও শিশুদের ভ্যাকসিনের মতো জরুরি সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

তাদের খাদ্য মজুত শেষ হয়ে গেছে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধের এক তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে নেই।

গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাকাবি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিপদ হলো মানুষ অনাহারে মারা যাওয়া’।

যদিও ইসরায়েলের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী শারেন হেসকেল সিএনএনকে বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তিনি খাদ্য সংকটের খবরকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন খাদ্য বিতরণের জন্য কিছু কেন্দ্র স্থাপন করবে।

এই কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা দেবে বেসরকারি মার্কিন সামরিক ঠিকাদাররা।

বিতরণ কেন্দ্রগুলোর বাইরে নিরাপত্তা দেবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

তবে, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।

তারা মনে করে, এই পদ্ধতিতে গাজার জনগণের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে না।

আগে গাজায় প্রায় ৪০০টি বিতরণ কেন্দ্র ছিল, যা বর্তমানে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে বন্ধ রয়েছে।

গাজার স্থানীয় সাহায্য সংস্থাগুলোও এই পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি এবং তারা এটিকে মানবিক নীতির পরিপন্থী হিসেবে দেখছে।

গাজায় কর্মরত ফিলিস্তিনি সাহায্য সংস্থাগুলোর পরিচালক আমজাদ আল-শাওয়া সিএনএনকে জানান, প্রস্তাবনার বিষয়ে তাদের কিছু জানানো হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে, নতুন এই ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হতে এখনো কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।

তবে, প্রধান সাহায্য সংস্থাগুলোর বিরোধিতার কারণে এর ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *