মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল বিপর্যস্ত! জরুরি ব্যবস্থা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি সামরিক হেলিকপ্টার ও বাণিজ্যিক বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের মতো ঘটনা এবং নিউ জার্সির প্রধান বিমানবন্দর, নিউয়ার্কে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে পুরাতন এই ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রী সম্প্রতি কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, যার মাধ্যমে আকাশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ করা হবে। তবে এই সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ এবং এর সফল প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

এর আগে, ২০০৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হলেও, আকাশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামো এবং জনবলের অভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) -এর তথ্য অনুযায়ী, তাদের ১৩৮টি সিস্টেমের মধ্যে ৫১টিই বর্তমানে অচল এবং আরও ৫৪টি সিস্টেম অচল হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

তাছাড়া, পুরনো তামার তারের (copper wires) উপর নির্ভরশীল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায়ই বিভ্রাটের কারণ হচ্ছে, যা বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে।

নিউয়ার্ক বিমানবন্দরের রাডার ব্যবস্থা গত সপ্তাহে কিছু সময়ের জন্য বিকল হয়ে পড়েছিল, যার ফলস্বরূপ অনেক ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিকারে, এফএএ পুরাতন তামার তারের পরিবর্তে ফাইবার অপটিক কেবল প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং নিউইয়র্ক ও ফিলাডেলফিয়ার মধ্যে অতিরিক্ত ডেটা লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

একইসঙ্গে, আরও বেশি সংখ্যক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত দেশগুলোতে আকাশ পথের নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের ভ্রমণকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরগুলোতে বিলম্ব অথবা অন্য কোনো সমস্যা হলে, তার প্রভাব বাংলাদেশের আকাশ পথেও পড়তে পারে। তাই, আকাশ পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তি এবং দক্ষ জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *