যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা, অনির্দিষ্টকালের জন্য তা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাদের বিমান হামলা অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে। গত শনিবার চালানো প্রথম দফা হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং আরও প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (তারিখ দিন বদলাবে) মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতি বিদ্রোহীদের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। এই বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব (নাম পরিবর্তন যোগ্য) বলেন, “হুতিরা যদি তাদের জাহাজ এবং ড্রোন হামলা বন্ধ করে, তাহলে এই অভিযানও বন্ধ হয়ে যাবে, অন্যথায় তা চলবে।”
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য হলো ইরানের প্রতি একটি কঠোর বার্তা পাঠানো। তারা আরও বলছেন, এই হামলা হুতি নেতাদের দুর্বল করতে সক্ষম হয়েছে এবং ইরানকে বোঝানো হয়েছে যে, যথেষ্ট হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট (নাম পরিবর্তন যোগ্য) ফ্লোরিডায় বসে বিমান হামলার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করছেন।
এদিকে, হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনি ও হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আন্তর্জাতিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তারা গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের দিকেও ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও রকেট নিক্ষেপ করেছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কমান্ডার মার্কিন হুমকি প্রসঙ্গে বলেছেন, হুতিরা স্বাধীনভাবে তাদের কৌশলগত ও সামরিক সিদ্ধান্ত নেয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ইয়েমেনে চালানো এই হামলাকে জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করেছে এবং দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসার চেষ্টা করছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়বে কিনা, সে বিষয়ে পর্যবেক্ষকরা উদ্বিগ্ন।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, শনিবারের হামলা ছিল ইয়েমেনে একটি বৃহত্তর অভিযানের শুরু। লোহিত সাগরে অবস্থান করা একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী থেকে এই হামলা চালানো হয়। পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই অভিযান কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
হুতিদের ‘প্রতিরোধ অক্ষশক্তির’ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখা হয়, যা ইরান তৈরি করেছে এবং এর মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চায়।
হুতিদের মুখপাত্র বলেছেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাজধানী সানার একটি আবাসিক এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে হুতি নেতৃত্বের কয়েকজন সদস্য বসবাস করেন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান