যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইনে ৫.৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ফিলিপাইনের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ফিলিপাইনের কাছে ২০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম বিক্রির অনুমতি দিয়েছে।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, এই চুক্তিটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ফিলিপাইনকে তারা এই অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এফ-১৬ বিমানগুলো ফিলিপাইনের বিমান বাহিনীকে সমুদ্র অঞ্চলের নজরদারি ও আকাশ পথে সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা বাড়াবে। একই সঙ্গে, এটি শত্রুপক্ষের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতেও সহায়ক হবে।
এই অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চীন বিতর্কিত সমুদ্র অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই নিজের বলে দাবি করে থাকে, যদিও আন্তর্জাতিক আইনে এর কোনো স্বীকৃতি নেই।
এই পরিস্থিতিতে, ফিলিপাইন ওয়াশিংটনের কাছ থেকে এফ-১৬ সহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করেছে। গত সপ্তাহে ফিলিপাইনে সফরকালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেটে হেগসেথ বলেন, চীন থেকে আসা হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে।
এই চুক্তির ফলে তাইওয়ান ইস্যুতেও ফিলিপাইনের সামরিক প্রস্তুতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনের সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিপাইনের সামরিক প্রধান জেনারেল রোমিও ব্রাওনার বলেছেন, তাইওয়ানে কোনো ধরনের আক্রমণ হলে, তার ফলশ্রুতিতে ফিলিপাইনও ‘অনিবার্যভাবে’ এতে জড়িত হবে।
তিনি সৈন্যদের উদ্দেশ্যে উত্তর লুজন দ্বীপে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে তাইওয়ানের কাছাকাছি সময়ে যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জেনারেল ব্রাওনার সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা আক্রমণের সম্ভাবনা দেখছি, তাই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
ডিসেম্বরে ফিলিপাইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মাঝারি পাল্লার টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা ঘোষণা করলে চীন অসন্তুষ্ট হয় এবং একে আঞ্চলিক ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
এই প্রেক্ষাপটে, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা