যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ৩২২ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এই অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে সাঁজোয়া যান এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। ইউক্রেন বর্তমানে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে।
পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এই সম্ভাব্য অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে তারা কংগ্রেসকে অবহিত করেছে। প্রস্তাবিত চুক্তির মধ্যে রয়েছে, ১৫০ মিলিয়ন ডলারের সাঁজোয়া যান সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং আধুনিকীকরণ। এছাড়াও, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭২ মিলিয়ন ডলার।
এই অনুমোদন এমন এক সময়ে এলো, যখন ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে মার্কিন সরকারের মধ্যে দ্বিধা দেখা দিয়েছিল। পেন্টাগন অস্ত্র ভাণ্ডারের মূল্যায়ন করার জন্য সরবরাহ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিষয়ে তার অবস্থান পরিবর্তন করে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের এটা করতেই হবে। তাদের নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হতে হবে। তারা এখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছে। আমরা তাদের আরও কিছু অস্ত্র পাঠাবো, প্রধানত আত্মরক্ষামূলক অস্ত্র।
ট্রাম্প সম্প্রতি ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনে। এরপর সেগুলো ইউক্রেনে পাঠানো যেতে পারে। যদিও এই প্রস্তাবিত বিক্রয়ের সঙ্গে সেই ব্যবস্থার সম্পর্ক এখনো স্পষ্ট নয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে, যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে ৬৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের অস্ত্র ও নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্পের মেয়াদে, ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা চলছিল। তবে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার মাধ্যমে সেই দ্বিধা অনেকটাই দূর হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক শাহ মো. তোফায়েল হোসেনের মতে, “যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্র সহায়তা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে। তবে, এর ফলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে কিনা, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই মুহূর্তে, ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে অস্ত্র ব্যবসার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস