মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির জেরে বিশ্বজুড়ে অটো শিল্পের বাজারে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের বাণিজ্য নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে, যার ফলস্বরূপ বিভিন্ন দেশের গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর নতুন করে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে, এবং অনেক দেশ এর তীব্র বিরোধিতা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক আরোপের মূল কারণ হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দিতে চাইছে। তারা মনে করে, বিদেশি গাড়ি শিল্পের আগ্রাসনের কারণে তাদের স্থানীয় বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদকরা লাভবান হতে পারে, তেমনই বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, জার্মানি, জাপান এবং চীনের মতো গাড়ি উৎপাদনকারী দেশগুলো এই শুল্ক নীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এই শুল্কের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (World Trade Organization – WTO)-এর নিয়ম লঙ্ঘিত হতে পারে। অনেক দেশ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এর প্রতিকার চেয়ে তারা আলোচনা শুরু করেছে।
তারা মনে করে, এই ধরনের বাণিজ্য নীতি বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি এই বিষয়টির দিকে তাকানো যায়, তাহলে দেখা যায়, সরাসরিভাবে আমাদের ওপর এর প্রভাব হয়তো ততটা বেশি পড়বে না। কারণ, আমরা সরাসরিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি করি না।
তবে, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে আমাদের দেশের বাণিজ্য, বিশেষ করে অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে, তার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উচিত হবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সুসংহত করা এবং বিকল্প বাজার তৈরির চেষ্টা করা। একইসঙ্গে, দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে শক্তিশালী করার দিকেও নজর দিতে হবে।
মোটকথা, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে। এর ফলস্বরূপ বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠবে, যা বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎকে নতুন করে প্রভাবিত করবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা