শিরোনাম: ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন’ হামলা, তেহরানের প্রতিক্রিয়া
ঢাকা, [তারিখ]: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের কয়েকটি পরমাণু কেন্দ্রে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, গত রবিবার চালানো এই হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক বোমারু বিমান ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। তবে ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামের এই অভিযানে ইরানের ফোরডো, নাতানজ এবং ইসফাহানের পরমাণু স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
হামলায় বিশেষভাবে সজ্জিত বি-২ স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়, যেগুলি গভীর ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ভেদ করতে সক্ষম বিশাল ওজনের বোমা বহন করতে পারে। এছাড়া, একটি মার্কিন সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয় টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ করা গেছে।
তবে ইরানের সরকারি সূত্রগুলো তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, হামলায় সামান্য কিছু ক্ষতি হলেও তা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসলামিক রিপাবলিক অবশ্যই এই আগ্রাসনের জবাব দেবে এবং এর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ব্যাহত করা।
তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, হামলার আগে ‘ভুল বার্তা’ পাঠানোর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল, যার ফলে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত ছিল না।
এর অংশ হিসেবে, হামলার কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (যদি তিনি তখন ক্ষমতায় থাকতেন) ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দুই সপ্তাহ সময় নেওয়ার ঘোষণা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই অভিযানে প্রায় ৭৫টি নির্ভুলভাবে পরিচালিত অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এর মধ্যে ছিল ১৪টি জিবিইউ-৫৭ ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বোমা এবং সাবমেরিন থেকে ছোড়া দুই ডজনের বেশি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। তিনি আরও জানান, এই অভিযানে ১২৫টির বেশি বিমান অংশ নেয়।
তবে এই হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ইরানের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণার পর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই হামলার ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং খুব শীঘ্রই বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস