মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি: চীন-শুল্ক নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই আশার আলো!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে চলমান আলোচনা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও।

সম্প্রতি, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। যদিও চীনের পক্ষ থেকে আলোচনার খবর অস্বীকার করা হয়েছে, বেসেন্টের এই মন্তব্য বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনের একটি পথ দেখাতে পারে।

বেসেন্ট গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বৈঠকে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি জানান, আলোচনা মূলত আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির পূর্বাভাস নিয়ে হয়েছে। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে জানান, চীন সরকারের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে।

তারা এটিকে ‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি’ বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিষয়ে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মেনে চলছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে সংহতি বজায় রাখতে চায়।

এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ শুল্ক হার চীনের ব্যবসার জন্য টেকসই হবে না।

বেসেন্ট মনে করেন, চীন সম্ভবত তাদের অভ্যন্তরীণ দর্শকদের কথা ভেবেই আলোচনার খবর অস্বীকার করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, একটি বাণিজ্য চুক্তি হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

এদিকে, মার্কিন কৃষি সচিব ব্রুক রোলিন্স জানিয়েছেন, শুল্ক নিয়ে তারা চীনের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছেন।

তিনি আরও জানান, বাণিজ্য যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মার্কিন কৃষকদের সহায়তার জন্য সরকার প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে চীনকে সয়াবিন এবং শুকরের মাংস রপ্তানিতে যদি কোনো সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে।

বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যেই কিছু প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দ্রুত ফ্যাশন ব্র্যান্ড শেইন তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।

পোশাক থেকে শুরু করে রান্নাঘরের সরঞ্জাম—সবকিছুতেই দাম বেড়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য পণ্যের শীর্ষ ১০০টির গড় মূল্য ৫১ শতাংশ বেড়েছে, আর রান্নাঘর ও খেলনার দাম ৩০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এমনকি ১০ পিসের কিচেন টাওয়ালের দামও ৩৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের শুল্ক এবং বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ।

এর সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নাও পড়তে পারে, তবে বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে তা দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে।

তাই, মার্কিন-চীন বাণিজ্য আলোচনা এবং এর ফলস্বরূপ বিশ্ব অর্থনীতির গতিবিধির দিকে আমাদের তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *