চীনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অস্থিরতা, বন্দরে পণ্য ওঠা-নামায় ধীরগতি।
যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরগুলোতে পণ্য পরিবহনে বর্তমানে এক ধরনের ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হল চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কের পরিবর্তন। সম্প্রতি শুল্ক হ্রাসের কারণে এখন আবার পণ্য আমদানির পরিমাণ বাড়তে পারে, কারণ ব্যবসায়ীরা চাচ্ছেন দ্রুত পণ্য এনে জমা করতে, যেন শুল্কের নতুন কোনো পরিবর্তনের আগেই তা সম্পন্ন করা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে অনেক ছোট ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। কারণ, বড় ব্যবসায়ীরা শুল্কের প্রভাব কিছুটা সামাল দিতে পারলেও ছোটদের পক্ষে সেই সুযোগ কম।
আগে, যখন শুল্ক অনেক বেশি ছিল, তখন বন্দরগুলোতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন শুল্ক কিছুটা কমানো হলেও, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে সময় লাগবে।
জানা গেছে, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠালে আগে যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো, তা এখন কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এই ছাড়ের মেয়াদ ৯০ দিন। ফলে ব্যবসায়ীরা এই সময়ের মধ্যে বেশি পণ্য আমদানি করতে চাইছেন।
বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের সরবরাহ শৃঙ্খল ও কাস্টমস নীতির ভাইস প্রেসিডেন্ট জোনাথন গোল্ড বলেন, “অনেক ব্যবসায়ী হয়তো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুত পণ্য নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের বন্দরগুলোতে জাহাজ আসা-যাওয়ার সংখ্যা এবং পণ্য পরিবহনের পরিমাণ কমে গেছে। এর কারণ, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের বন্দরে পণ্য পৌঁছাতে প্রায় তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগে। লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দরের নির্বাহী পরিচালক জীন সেরোকা জানিয়েছেন, “এই মাসের শেষে জাহাজ চলাচল প্রায় ২০ শতাংশ এবং পণ্য পরিবহন ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে পণ্য পৌঁছাতে আরও বেশি সময় লাগে। তাই সেখানকার বন্দরগুলোতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুল্ক কমানো হলেও অনেক ব্যবসার জন্য ৩০ শতাংশ শুল্ক এখনো অনেক বেশি। বিশেষ করে ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য এটি বেশ কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চেম্বার বলছে, শুল্কের কারণে ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের জন্য শুল্কের বোঝা কমানো উচিত।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামে প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারেও দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের এই পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন