আলোচনা সফল! চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধে কি শান্তি ফিরছে?

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ: জেনেভায় বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি, বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য।

বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এই বৈঠকে উভয় পক্ষই শুল্ক হ্রাস এবং বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছে।

তবে, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনা ফলপ্রসূ হলেও, দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের জটিলতা সহজে কাটবে না।

বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। চীনের পক্ষে ছিলেন ভাইস-প্রিমিয়ার হে লিফেং।

আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই তাদের মধ্যেকার আলোচনাকে খোলামেলা, গভীর এবং ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

আলোচনার মূল বিষয় ছিল, কিভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান উচ্চ শুল্কের বোঝা কমানো যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে চীনের উপর আরোপিত শুল্কের পরিমাণ ছিল ১৪৫ শতাংশ, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে যা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ২৪৫ শতাংশে।

চীনও এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এই শুল্কের কারণে উভয় দেশের বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আলোচনার শুরুতে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি শুল্ক কমাতে পারেন, তবে এর জন্য চীনকে কিছু ছাড় দিতে হবে। তবে, মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এখনই একতরফাভাবে শুল্ক কমানোর কোনো পরিকল্পনা করছেন না।

বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল উত্তেজনা কমানো, কোনো বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি করা নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই বাণিজ্য বিরোধের সরাসরি প্রভাব রয়েছে বাংলাদেশের উপরও। চীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে, আমদানি করা পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে তা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে, এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে তা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হবে এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে।

তবে, এই আলোচনার ফল কতদূর গড়ায়, সেদিকেই এখন সকলের দৃষ্টি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *