মার্কিন-চীন বাণিজ্য: অবশেষে কি শান্তির বার্তা?

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হওয়া আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। দু’দেশের কর্মকর্তারা তাদের মধ্যেকার দীর্ঘ আলোচনা শেষে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

খবর অনুযায়ী, উভয় পক্ষই ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে বিস্তারিত চুক্তির বিষয়গুলো এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এই আলোচনার ফলে বিশ্ব বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাণিজ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রিয়ার জানান, তারা একটি ‘চুক্তি’র কাছাকাছি পৌঁছেছেন। অন্যদিকে, চীনের প্রতিনিধিদল জানিয়েছে, তারা একটি আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজি হয়েছে।

আলোচনার বিস্তারিত জানাতে সোমবার জেনেভাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। সুইজারল্যান্ডের জাতিসংঘ প্রতিনিধির বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি জানাতে পেরে আনন্দিত যে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনায় আমরা যথেষ্ট উন্নতি করেছি।”

উভয় দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বজুড়ে বাজার অস্থির হয়ে ওঠে, সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটে এবং অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়।

এই পরিস্থিতিতে, বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আলোচনায় চীনের ভাইস প্রিমিয়ার, যিনি তাঁর প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি কোনো চুক্তির কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি, তবে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন দুই পক্ষ আলোচনাকে ফলপ্রসূ করতে এবং মতপার্থক্যগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে প্রস্তুত।

এর মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে, গত কয়েক দিনে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সমুদ্রবন্দরগুলোতে কোনো পণ্যবাহী জাহাজ আসেনি, যা কোভিড-১৯ মহামারীর পর এই প্রথম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনা সফল হলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, বিশ্ব বাজারের সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা আসলে বাংলাদেশের বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের জন্য তা ইতিবাচক হবে।

এছাড়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতা আসবে, তার সুফল পাবে বাংলাদেশও।

তবে, বাণিজ্য চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ না হওয়ায় এর সুফল সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সোমবার জেনেভার সংবাদ সম্মেলনে চুক্তির বিস্তারিত জানা যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *