মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি, উভয় দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্কের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, যুক্তরাষ্ট্রও চীনা পণ্যের উপর শুল্কের হার ১৪৫ শতাংশের বেশি নির্ধারণ করেছে। এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের কারণে বাণিজ্য যুদ্ধ কোন দিকে মোড় নেয়, তা বলা কঠিন।
এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার এই বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর এর একটি বড় প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কের পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এছাড়াও, বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আসায়, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারেও মূল্যস্ফীতি ঘটাতে পারে। একইসঙ্গে, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিতে নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হতে পারে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের রপ্তানি বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে এবং নতুন বাজার অনুসন্ধানে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
উদাহরণস্বরূপ, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কোনো পণ্যের উপর শুল্ক বাড়ে, তবে সেই পণ্যের দাম স্থানীয় বাজারে বেড়ে যাবে। এতে একদিকে যেমন ভোক্তার খরচ বাড়বে, তেমনি শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহও ব্যাহত হতে পারে।
অন্যদিকে চীন যদি বাংলাদেশের কোনো পণ্যের উপর শুল্ক বাড়ায়, তবে সেই পণ্যের রপ্তানি কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বাণিজ্য যুদ্ধের এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে নজর রেখে, দেশের বাণিজ্য নীতিকে সময়োপযোগী করে তুলতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন