মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যা বিশ্বজুড়ে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জলবায়ু পরিবর্তনের ধারণাটিকে কার্যত দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য একটি অশনি সংকেত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ)-এর এমন একটি পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় বলে ঘোষণা করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে কয়লা শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর ভর্তুকি বন্ধ করার মতো পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর পরিবর্তে ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে পুরনো নীতিতে ফিরে যেতে। এর ফলে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো, যেমন বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা আরও বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন আর কোনো গবেষণার বিষয় নয়, বরং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরম আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ইতোমধ্যে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইকে দুর্বল করে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা সম্ভব। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান নীতি সেই পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ কমানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে সহায়তা করা অপরিহার্য। এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন