গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাতার-এ চলমান আলোচনা স্থগিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামাসের পক্ষ থেকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনীহা দেখা যাওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
বৃহস্পতিবার তিনি জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হিসেবে মধ্যস্থতাকারীরা অনেক চেষ্টা চালিয়েছেন, কিন্তু হামাস এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে চাইছে না।
উইটকফ আরও জানান, হামাসের এই ‘স্বার্থপর’ আচরণের কারণে যুক্তরাষ্ট্র হতাশ। এখন জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজার জনগণের জন্য একটি স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য বিকল্প পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।
গাজায় মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। গত কয়েক মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চললেও কোনো সমাধান আসেনি।
সম্প্রতি গাজায় খাদ্য সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা গত ২১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা।
আলোচনায় প্রধান বাধা হলো যুদ্ধ বন্ধের শর্ত নিয়ে দুই পক্ষের অনড় অবস্থান। হামাস চাইছে, ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করুক এবং যুদ্ধ শেষ করুক।
অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, হামাস অস্ত্র ত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ বন্ধ করবে না।
জানা গেছে, কাতার-এ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনার ফলস্বরূপ একটি চুক্তির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছিল। এই চুক্তিতে প্রস্তাব ছিল, হামাস জীবিত ১০ জন এবং মৃত ১৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের কারাবন্দিদের মুক্তি দেবে এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো হবে। এছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির জন্য উভয় পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাবে।
এদিকে, হামাসের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় দেশটির আলোচনা দলের সদস্যদের কাতার থেকে ফিরিয়ে এনেছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতার ও মিশরের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় স্টিভ উইটকফ সম্ভবত ইউরোপ সফরে যেতে পারেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস