যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত: সিরিয়ার নতুন সরকারের জন্য কঠিন বার্তা!

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার নতুন সরকারের কাছে কিছু শর্ত দিয়েছে, যার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত ১৮ই মার্চ ব্রাসেলসে সিরিয়া বিষয়ক দাতাদের একটি সম্মেলনে মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাতাশা ফ্রান্সেস্কি সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সেখানেই এই শর্তগুলো পেশ করা হয়।

এই শর্তগুলোর মধ্যে প্রধান বিষয়গুলো হলো, সিরিয়াকে তাদের অবশিষ্ট রাসায়নিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ধ্বংস করতে হবে এবং সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়া, সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদগুলোতে বিদেশি যোদ্ধা নিয়োগ করা যাবে না।

একইসঙ্গে, এক দশক আগে সিরিয়ায় নিখোঁজ হওয়া মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসকে খুঁজে বের করতে সহায়তা করতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই শর্তগুলো পূরণ হলে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারে। তবে, ঠিক কী ধরনের ছাড় দেওয়া হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

সেইসাথে, শর্তগুলো পূরণ করার জন্য কোনো সময়সীমাও উল্লেখ করা হয়নি।

প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি বিপর্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার সরকার ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা দেশটির অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে দিয়েছে।

যদিও কিছু নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে, তবে এর প্রভাব সীমিত। উদাহরণস্বরূপ, মানবিক সহায়তা সহজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র জানুয়ারিতে ছয় মাসের একটি সাধারণ লাইসেন্স জারি করেছিল, কিন্তু এর মাধ্যমে কাতারের পক্ষে সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

সিরিয়ার কর্মকর্তারা, যেমন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল-শিবানি এবং অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার মতে, নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পূর্ণরূপে তুলে নেওয়া উচিত। তাদের যুক্তি হলো, বাশার আল-আসাদের পতনের পর এই নিষেধাজ্ঞাগুলো আর বহাল রাখা ন্যায়সঙ্গত নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের সমর্থন এবং “ইসলামপন্থী চরমপন্থা”র নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে, নিষেধাজ্ঞার ভবিষ্যৎ এবং সিরিয়ার উত্তর-পূর্বে মার্কিন সেনা মোতায়েন থাকবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও সিরিয়া নীতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। হোয়াইট হাউসের কিছু কর্মকর্তা সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রাখার পক্ষে, কারণ তাদের অতীতের আল-কায়েদার সঙ্গে যোগসূত্র ছিল।

অন্যদিকে, পররাষ্ট্র দপ্তর সিরিয়ার সঙ্গে আরও সুসংহত সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছে।

এছাড়াও, ইসরায়েলও যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রাখতে উৎসাহিত করছে। তাদের আশঙ্কা, সিরিয়া দুর্বল থাকলে ইসরায়েলের জন্য তা ভালো হবে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এখনো ইসরায়েলের এই উদ্বেগের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একমত হননি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *