মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাইতির দুটি শক্তিশালী গ্যাং-কে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শুক্রবার এই ঘোষণা আসে, যা হাইতিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গ্যাংগুলো হলো ‘ভিভ আনসানম’ এবং ‘গ্রান গ্রিফ’। এই গ্যাংগুলোর সদস্যরা হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানান, এই গ্যাংগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের জন্য সরাসরি হুমকি স্বরূপ। তিনি আরও বলেন, গ্যাংগুলোকে কোনো ধরনের সহায়তা প্রদান করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক অভিযোগ আনা হতে পারে এবং তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
হাইতিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা মিশনের কার্যক্রমও বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই গ্যাংগুলোর দৌরাত্ম্য বাড়ছে। গ্যাংগুলো রাজধানীর প্রধান সড়ক এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপো ও প্রধান বন্দরের কাছাকাছি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে, যা দেশের বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সন্ত্রাসী ঘোষণার ফলে হাইতির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। কারণ গ্যাংগুলো এখন দেশটির অর্থনীতির ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে হাইতির সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এর আগে থেকেই হাইতিতে মানবিক সংকট চলছে।
খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। জাতিসংঘ হাইতিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
কারণ, হাইতির গ্যাংগুলোর কাছে অবৈধ অস্ত্রের প্রধান উৎস হলো যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে হাইতিতে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইজকে ২০২১ সালে হত্যা করা হয়।
এরপর থেকে রাজনৈতিক শূন্যতা দেশটির সংকটকে আরও গভীর করেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান