মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা, মন্দার আশঙ্কা: ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির প্রভাব?
এপ্রিল মাসটি ছিল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বেশ অস্থির একটি সময়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার, বিশেষ করে এস অ্যান্ড পি ৫০০ এবং ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ, এই অস্থিরতার সাক্ষী থেকেছে। মাস শেষে সূচকগুলো ছিল নিম্নমুখী।
এর কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সংকোচন:
সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের পর প্রথমবারের মতো চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
এপ্রিলের শুরুতে এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক ১১ শতাংশের বেশি কমে যায়। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে বাজারে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্পের নীতি:
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মেয়াদে বাণিজ্য নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন, যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি। বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্ক বৃদ্ধি বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে মার্কিন শেয়ার বাজারে।
যদিও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে, তবে ট্রাম্পের নীতি এখনো উদ্বেগের কারণ।
শেয়ার বাজারের চিত্র:
এপ্রিল মাসে ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সামান্য বৃদ্ধি পেলেও এস অ্যান্ড পি ৫০০ এবং নাসডাকের পতন দেখা যায়। বাজারের এই অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করেছে।
অন্যদিকে মন্দার আশঙ্কা বাজারকে চাপে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
অর্থনীতিবিদ এবং বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে বাজারের এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, যদি শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন আনা না হয়, তাহলে বাজারে অস্থিরতা আরো বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, কেউ কেউ বলছেন, বাজারের এই পরিস্থিতি সাময়িক এবং খুব দ্রুতই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বাংলাদেশের জন্য প্রভাব:
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য কিছু প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য এবং প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে, অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে এবং এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতাও তাদের রয়েছে।
ভবিষ্যতের পূর্বাভাস:
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী মাসগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং শেয়ার বাজারের গতিবিধি বিশেষভাবে লক্ষণীয় হবে। তারা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে বলছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন