মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্যারিসে দুই দিনের এই বৈঠকে মিলিত হবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং ইউরোপীয় নেতারা।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির প্রতিনিধিরা। এই আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে একটি সমন্বিত পদক্ষেপের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি চাপ সৃষ্টি করছেন, আবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন, যা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত। পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোরস্কি মনে করেন, মস্কোর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যখন ইউক্রেনের সুমি শহরে অনেক মানুষ নিহত হলো, তখন ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপ পুতিনের ‘শুভ ইচ্ছাকে উপহাস’ করার শামিল।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়গুলি এখনো বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে জানা গেছে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য একটি সমন্বিত ইউরোপীয় পদক্ষেপ নিতে চাইছে। এই বিষয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাশা করে।
অন্যদিকে, ইরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়েও আলোচনা হবে। স্টিভ উইটকফ শনিবার ইতালির রোমে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এর আগে, তাঁরা ওমানেও একবার মিলিত হয়েছিলেন, যেখানে আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, চুক্তি না হলে তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠকটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর একটি সুযোগ হতে পারে। কারণ, ট্রাম্প তাঁর আগের মেয়াদে ইরানের সঙ্গে হওয়া ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে তেহরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান