শিরোনাম: ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ানোর অনুমতি পশ্চিমা মিত্রদের, যা যুদ্ধের মোড় ঘোরাতে পারে
ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন মোড়! কিয়েভকে সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো। এর ফলে ইউক্রেন এখন রাশিয়ার অভ্যন্তরে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্চ সোমবার এই ঘোষণা করেন।
এই সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। তাদের মতে, এমন পদক্ষেপ ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যেকোনো শান্তি আলোচনার পরিপন্থী।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা মিত্রদের কাছে এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারের স্বাধীনতা চেয়ে আসছিলেন। তার মতে, এর ফলে ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি, গোলাবারুদের গুদাম এবং কমান্ড সেন্টারে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
ফ্রিডরিখ মার্চ-এর ঘোষণার পর প্রশ্ন উঠেছে, এই পদক্ষেপ কি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাকে প্রভাবিত করবে?
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় আসা কঠিন হবে। কারণ, এর ফলে যুদ্ধের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
তবে, ঠিক কত পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এর আগে, গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। সেই সময় ইউক্রেন রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।
এদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলো যদি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়, তাহলে সেটি হবে গুরুতর একটি পদক্ষেপ।
এর ফলে ন্যাটো সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছিলেন, এমনটা ঘটলে সংঘাতের চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে যাবে।
এই পরিস্থিতিতে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মুখ খুলেছেন।
তিনি পুতিনের সমালোচনা করে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ‘পাগলামি’ করছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে সাধারণ মানুষের জীবনহানি ঘটাচ্ছেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করছেন।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, রোববার রাতে রাশিয়া তাদের ওপর সর্ববৃহৎ বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর এই পদক্ষেপ রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করতে পারে।
তবে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের ইঙ্গিতও বহন করে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা