ইরান সংকটে: মধ্যপ্রাচ্যে জরুরি অবস্থা জারি, নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার নাগরিকদের নিরাপত্তা জোরদার করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ইসরায়েল থেকে আমেরিকান নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জরুরি ফ্লাইট দ্বিগুণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে জরুরি নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, সৌদি আরব এবং তুরস্কের আমেরিকান নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধের আশঙ্কায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে, ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এর ফলস্বরূপ, শনিবার জেরুজালেমের মার্কিন দূতাবাস ব্যক্তিগত আমেরিকানদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়ার ফ্লাইট শুরু করে।

ইতিমধ্যে, দুটি সরকারি ফ্লাইটে ৬৭ জন আমেরিকান নাগরিককে গ্রিসের এথেন্সে পাঠানো হয়েছে। রবিবার আরও চারটি ফ্লাইট এথেন্সের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল।

এছাড়াও, একটি বেসরকারি চার্টার্ড ফ্লাইট সোমবার ইসরায়েল থেকে ইতালির রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে, ১০০০ জনেরও বেশি আমেরিকান নাগরিককে বহনকারী একটি ক্রুজ জাহাজ সাইপ্রাসে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে কয়েকশো ছিল ইসরায়েল ভ্রমণে আসা ইহুদি তরুণ-তরুণী।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৭,৯০০ আমেরিকান ইসরায়েল ছাড়তে এবং ১,০০০ জনের বেশি ইরান ছাড়তে সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। বর্তমানে ইসরায়েলে প্রায় ৭ লক্ষ এবং ইরানে কয়েক হাজার আমেরিকান নাগরিক বসবাস করছেন।

যদিও সীমান্ত দিয়ে কতজন আমেরিকান ইরান ত্যাগ করতে সক্ষম হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে জানা গেছে, সংঘাত শুরুর পর থেকে শনিবার পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজানে প্রবেশ করেছে।

এছাড়াও, মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরাকের মার্কিন দূতাবাস এবং এরবিল কনস্যুলেট থেকেও কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই কর্মীদের সরানোর প্রক্রিয়া গত ১২ই জুন থেকে শুরু হয়েছিল এবং ২১ ও ২২শে জুন অতিরিক্ত কিছু কর্মীকে ইরাক ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *