মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র গরমের ঝুঁকি: জলবায়ু পরিবর্তনের সতর্কবার্তা।
গ্রীষ্মকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তীব্র গরম জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এর ফলে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং গরম সম্পর্কিত অসুস্থতায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়।
আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে, সেখানকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (National Weather Service) এবং ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (US Centers for Disease Control and Prevention) গরমের ঝুঁকির পূর্বাভাস তৈরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর প্রতিদিন তাপমাত্রার পূর্বাভাস প্রকাশ করে, যা আসন্ন গরমের তীব্রতা এবং সম্ভাব্য সময়কাল সম্পর্কে ধারণা দেয়। এই পূর্বাভাসে অতীতের ডেটা বিশ্লেষণ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি বিবেচনা করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, কোন অঞ্চলে কতজন মানুষ গরমের কারণে অসুস্থ হতে পারে বা মৃত্যুর ঝুঁকি কতখানি, তা এই ডেটার মাধ্যমে জানা যায়।
এছাড়াও, এই সংস্থাগুলি ‘অনুভূত তাপমাত্রা’ (Feels Like Temperature) সম্পর্কেও পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। বাতাসে আর্দ্রতা ও অন্যান্য বিষয়গুলি বিবেচনা করে এই পূর্বাভাস তৈরি করা হয়, যা বাইরের তাপমাত্রা কেমন অনুভূত হবে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
এই পূর্বাভাসগুলি সাধারণত বিভিন্ন শহরের জন্য তৈরি করা হয়, যেখানে ৫০,০০০ এর বেশি মানুষ বসবাস করে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এখন গরম সতর্কতা এবং সতর্কতার আওতায় রয়েছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মকালে গড়ে প্রায় ৬ কোটির বেশি মানুষ এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও সাধারণ, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। রাতের বেলাতেও তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে না, ফলে গরম থেকে স্বস্তি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গরমের রেকর্ডও ভাঙছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রার পূর্বাভাস প্রকাশ করে।
উদাহরণস্বরূপ, কিছু অঞ্চলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা নতুন রেকর্ড তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদরা আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য বিভিন্ন অঞ্চলের গড় তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেওয়ারও চেষ্টা করছেন। এই পূর্বাভাসে অঞ্চলগুলোর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়।
সাধারণত, যে অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা থাকে, সেখানকার গড় তাপমাত্রা বেশি থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সংকট। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশেই তাপমাত্রা বাড়ছে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির জন্য এই ধরনের পূর্বাভাস এবং সতর্কতা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের দেশেও ভবিষ্যতে তাপপ্রবাহের ঝুঁকি বাড়ছে, তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন