যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অচলাবস্থার দিকে, সঙ্কট বাড়ছে: খাদ্য সহায়তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হওয়ায় দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনে দুর্ভোগ বাড়ছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের মধ্যে রাজনৈতিক মতানৈক্যের কারণে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যার মূল কারণ হলো বাজেট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যেকার তীব্র বিভেদ।
এর ফলে খাদ্য সহায়তা এবং স্বাস্থ্যখাতে ফেডারেল সরকারের তহবিল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা দেশটির দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অচলাবস্থার প্রধান কারণ হলো, আসন্ন নির্বাচনে জয়লাভের জন্য উভয় দলের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা। রিপাবলিকান পার্টি চাইছে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা স্বাস্থ্যখাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে চাইছে। এই দুইয়ের মধ্যে কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
এছাড়াও, সিনেটে একটি বিতর্কিত নিয়ম (ফিলিবাস্টার) প্রয়োগের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে, যা অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলছে।
সরকার অচলাবস্থার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম বা স্ন্যাপ) বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে, যা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত করবে।
এছাড়া, মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক সহায়তা কর্মসূচি (উইমেন, ইনফ্র্যান্টস, অ্যান্ড চিলড্রেন প্রোগ্রাম বা উইক)-এর কার্যক্রমও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলস্বরূপ, বহু আমেরিকান পরিবার খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
এই অচলাবস্থা নিরসনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চললেও, কোনো সুস্পষ্ট সমাধান এখনো পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি নন, যতক্ষণ না ডেমোক্র্যাটরা তাদের দাবি থেকে সরে আসে।
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা মনে করছেন, ট্রাম্পকেই আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে অচলাবস্থা কত দিন চলবে, তা বলা কঠিন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে এর নেতিবাচক প্রভাব আরও বাড়বে। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে, যা আসন্ন নির্বাচনে দলগুলোর জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
এমতাবস্থায়, উভয় দলেরই দ্রুত একটি সমাধানে আসা উচিত, যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমানো যায় এবং সরকারি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে।
তথ্য সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।