মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমের ঝুঁকি বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। সেখানকার আবহাওয়া দপ্তর এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলি (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) এই গরমের ঝুঁকি সম্পর্কে পূর্বাভাস তৈরি করছে এবং জনসাধারণকে সতর্ক করছে।
এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশেও গরম বাড়ছে, এবং ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও খারাপ হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরি করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেয়, যা তাপমাত্রা কত হতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
এছাড়াও, ‘অনুভূত তাপমাত্রা’ (Feels like temperature) নামে একটি ধারণা ব্যবহার করা হয়, যা বাতাসের আর্দ্রতা এবং বাতাসের গতির ওপর ভিত্তি করে শরীরের ওপর গরমের প্রভাব কেমন হবে, তা জানায়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) হয় এবং বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে, তাহলে ‘অনুভূত তাপমাত্রা’ আরও বেশি হতে পারে, যা মানুষকে আরও বেশি কষ্ট দিতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, গরমের কারণে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। গরমের কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় এবং হিট স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে।
গত বছর, গ্রীষ্মকালে প্রায় ৬ কোটির বেশি মার্কিন নাগরিককে গরমের সতর্কতা ও নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। আমাদের দেশেও গরম বাড়ছে, বিশেষ করে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সময়ে গরমের তীব্রতা বাড়ে।
বর্তমানে, বাংলাদেশেও গরমের সতর্কতা জারির ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও নির্ভুল পূর্বাভাস তৈরি করা যেতে পারে।
এর ফলে, মানুষ আগে থেকেই সতর্ক হতে পারবে এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক ঝুঁকিগুলো কমানো সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদরা শুধু তাপমাত্রাই নয়, বরং আগামী কয়েক সপ্তাহের গড় তাপমাত্রার পূর্বাভাসও দিয়ে থাকেন।
এই ধরনের পূর্বাভাস বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে জানা যেতে পারে, কোন অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম থাকবে।
এর ফলে, সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার পূর্বাভাস পাওয়া যায়, তাহলে সেখানে হিট অ্যালার্ট জারি করা যেতে পারে।
এছাড়াও, গরম থেকে বাঁচতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা যেতে পারে।
গরমের সময় শ্রমিকদের জন্য কাজের সময় পরিবর্তন করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করা যেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গরম আরও বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তাই, এখনই আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আমরাও আমাদের দেশের জন্য একটি কার্যকর গরম মোকাবেলা পরিকল্পনা তৈরি করতে পারি।
এর মাধ্যমে, আমরা আমাদের নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে পারব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন