যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসে (Los Angeles) সেনা মোতায়েনকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
বিভিন্ন শহরের মেয়ররা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং অভিবাসন বিষয়ক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। বুধবার রাতে কারফিউ জারির পর বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে জলকামান ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। শহরের মেয়র কারেন বাস (Karen Bass) এই অভিযানকে শ্বেত ঘরের (White House) উস্কানি হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভের মূল কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা। ধারণা করা হচ্ছে, শহরটিতে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ হয় কাগজপত্রহীন অভিবাসী।
বিক্ষোভের জেরে এখন পর্যন্ত প্রায় চারশ’ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম (Gavin Newsom) সামরিক বাহিনীর অভিবাসন কর্মকর্তাদের সহায়তা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। গভর্নর নিউজম এই পদক্ষেপকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের পাশাপাশি ডালাস, অস্টিন, শিকাগো, ডেনভার এবং নিউইয়র্কের মতো শহরগুলোতেও অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। নিউইয়র্কে বিক্ষোভের সময় ৮৬ জনকে আটক করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির (ICE) কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানায়।
এই বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে রিপাবলিকান গভর্নর রন ডিসান্তিস (Ron DeSantis) জানিয়েছেন, রাজ্যগুলোর ফেডারেল অভিবাসন আইন থেকে আলাদা থাকার কোনো অধিকার নেই। টেক্সাস ন্যাশনাল গার্ডও (Texas National Guard) বিক্ষোভের সময় উপস্থিত ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প এই সংকট তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন। হোয়াইট হাউসের সাবেক কর্মকর্তা স্টিফেন মিলার (Stephen Miller) জানিয়েছেন, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টকে (ICE) প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার জনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সংখ্যাটি আগের তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে, অভিবাসন অধিকারকর্মীরা বলছেন, আটককৃতদের মধ্যে অনেকেই কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন এবং তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়াও, বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে অন্তত ৩৫ জন সাংবাদিককে আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস