আমেরিকায় শিশুমৃত্যু হ্রাস: নতুন বছরে আশার আলো?

যুক্তরাষ্ট্রে (US) শিশু মৃত্যুর হারে উল্লেখযোগ্য পতন দেখা গেছে, যা জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। রোগের বিস্তার রোধে RSV (Respiratory Syncytial Virus) ভ্যাকসিনের সফল প্রয়োগের ফলে এই ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রতি ১,০০০ জীবিত জন্মে শিশু মৃত্যুর হার ছিল ৫.৫, যেখানে আগের দু’বছর এই হার ছিল ৫.৬।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) থেকে জানানো হয়েছে, বছরের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত সংখ্যায় খুব বেশি পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। শিশুদের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে RSV-এর টিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।

এছাড়া, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ৩২ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে RSV ভ্যাকসিন প্রয়োগের সিদ্ধান্তও এক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, RSV-এর বিরুদ্ধে টিকাদান কর্মসূচি সম্ভবত এই সাফল্যের একটি প্রধান কারণ। মার্চ অফ ডাইমসের (March of Dimes) প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ড. আমান্ডা উইলিয়ামস এই বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

CDC-র আরেকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪-২৫ শ্বাসতন্ত্রীয় ভাইরাস মৌসুমে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা আগের গড় হিসাবের তুলনায় ৪০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।

তবে, এই উন্নতির পেছনে আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। ড. উইলিয়ামস আরও জানান, শিশুদের মৃত্যুর হারে এই পরিবর্তন মূলত এক মাসের বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা গেছে।

এর কারণ হিসেবে RSV-এর সংক্রমণ হ্রাস ছাড়াও, দুর্ঘটনা, হত্যাকাণ্ড অথবা আকস্মিক শিশু মৃত্যুহার (SIDS) -এর মতো বিষয়গুলোও কাজ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের মৃত্যুহার অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনো কিছুটা বেশি। এর কারণ হিসেবে দারিদ্র্য, পর্যাপ্ত প্রসবপূর্ব যত্নের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করা হয়।

তবে, চিকিৎসা বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে সেখানেও ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা বিষয়টি বিবেচনা করি, তাহলে দেখা যায়, এখানেও শিশুমৃত্যু হ্রাসের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউনিসেফ (UNICEF)-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার এখনো যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি।

তাই, যুক্তরাষ্ট্রের এই সাফল্যের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতেও তা প্রয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *